Exit Poll – কার দখলে গ্রামবাংলা? কি বলছে ওপিনিয়ন পোল? পঞ্চায়েত ভোটের জেলা ভিত্তিক সমীক্ষা দেখুন।
Exit Poll of Panchayat Election 2023
গ্রাম বাংলার ক্ষমতা কার হাতে থাকবে, ভোট গননার আগেই Panchayat Election 2023 Exit Poll প্রকাশিত হল। গতকালই কার দখলে কয়টি জেলা থাকতে পারে তা নির্ধারণ করে দিলেন বাংলার সাধারণ ভোটাররা।
শেষ হলো পঞ্চায়েত নির্বাচন ২০২৩ (Panchayat Election 2023) এখনো পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা, অশান্তি ছাড়া নির্বিঘ্নেই পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি নির্বাচন কমিশন ও শাসক দলের। এদিকে বিজেপি, সিপিআইএম, কংগ্রেস, আইএসএফের মতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে একের পর এক মামলা দায়ের করে।
বিভিন্নভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়। যার ফলে একটা সময় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মামলা দায়ের করে বেশ কিছু ব্যাক্তি নিজেদের হেডলাইনে আনতে চাইছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) প্রতিটি বুথে দেওয়ার হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। তার কারণ হিসেবে দেখা গিয়েছে, হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের সঙ্গে। সেক্ষেত্রে একজন রাজ্য পুলিশ এবং একজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান থাকার কথা ছিল।
কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর কো-অর্ডিনেটর জানান, সেন্ট্রাল ফোর্স মোতায়েনের ক্ষেত্রে অন্ততপক্ষে যে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে (Polling Station) ১টি বা ২টি বুথ রয়েছে, সেখানে হাফ সেকশন বাহিনী অর্থাৎ ৪জন জওয়ান রাখতেই হবে। ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সংখ্যা কম থাকায় তা মোতায়েন করা সম্ভব হয়নি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাধ্য হয়েই একটা সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশন (Election Commission) রাজ্য সশস্ত্র পুলিশকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয় এবং তারা প্রতিটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে।
কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট গ্রহণের দিন Panchayat Election 2023 বা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু প্রাণহানির ঘটনাও (৩২) সামনে এসেছে। তবে পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হতেই এবার রাজ্যবাসী তাকিয়ে রয়েছেন ফলাফলের দিকে। গ্রাম বাংলার রাশ কোন রাজনৈতিক দলের হাতে থাকবে, শাসক দল তৃণমূলের নাকি বিরোধী বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস, আইএসএফ সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের, ১১ ই জুলাই মঙ্গলবার জানা যাবে ফলাফল (Panchayat Result) তবে তার আগে একনজরে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা এবং সমীক্ষক সংস্থার করা নির্বাচনী ফলাফলের সমীক্ষা অনুযায়ী কয়েকটি জেলার জেলাওয়ারি সমীক্ষার ফল (Exit Poll Opinion Poll) তুলে ধরা হলোঃ
এই Exit Poll, C Voter সংস্থার করা, সুখবর বাংলা শুধুমাত্র তা প্রকাশ করছে।
Panchayat Election 2023 Exit Poll
১. দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা (South 24 Parganas):
এই জেলা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার আগেও এই জেলার অধিকাংশ জায়গাতেই তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তপোক্ত সংগঠন ছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় জেলা পরিষদের মোট আসন ৮৫।
সংবাদ সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কমবেশি ৭০ টি আসনে জয়লাভ করতে পারে।
সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপির দখলে যেতে পারে ১০ থেকে ১৫ টি আসন।
২. পূর্ব মেদিনীপুর জেলা (East Midnapore):
এই জেলা রাজ্য রাজনীতিতে এখনো গুরুত্বপূর্ণ। তার কারণ, এখান থেকেই নন্দীগ্রাম বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বিজেপি নেতা এবং বর্তমানে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অনেকেই এই জেলাকে একটা সময় শুভেন্দু গড় বলতেন। তবে বর্তমানে বিজেপির সংগঠন ধীরে ধীরে দুর্বল হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অনেকে শুভেন্দুর জেলা বলে বিজেপির পক্ষে অনুকূল হতে পারে বলে অনুমান করলেও বাস্তবে সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী হয়েছে উল্টোটাই। সমীক্ষাতে কি জানা যাচ্ছে?
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় জেলা পরিষদের মোট আসন 70
সেখানে শাসক দল তৃণমূলের দখলে আসতে পারে ৪০ থেকে ৪৫ টি আসন।
বিরোধী বিজেপির দখলে যেতে পারে ২০ থেকে ২৫ টি আসন।
এই জেলায় আবার সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, বাম কংগ্রেস ১টি আসন পেলেও পেতে পারে।
৩.নদীয়া জেলা (District- Nadia):
নদীয়া জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের আধিপত্য আগেও ছিল, এখনো আছে। এখানেও যথেষ্ট শক্তপোক্ত সংগঠন তৃণমূলের। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখানে সমীক্ষার ফলে কি জানা যাচ্ছে?
নদীয়া জেলা পরিষদের মোট আসন ২৬ টি
তৃণমূলের দখলে আসতে চলেছে কম বেশি ২৫ টি আসন।
বিজেপির দখলে ০ থেকে ২ টি আসন যেতে পারে।
আবার এই জেলায় বাম- কংগ্রেস খাতা খুলতে পারে বলেও সমীক্ষায় উঠে আসছে।
৪. উত্তর 24 পরগণা জেলা (District- North 24 Parganas):
কলকাতার লাগোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ জেলা এটি। বরাবর উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূল ব্যাপক ভালো ফল করে। তবে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে শহরকেন্দ্রিক জেলা হওয়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ নিয়ে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস এবং আইএসএফ নির্বাচনের আগে ময়দান গরম করার চেষ্টা করে। তবে পঞ্চায়েত ভোট নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। দুই- একটি বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটলেও সেক্ষেত্রে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এবার দেখা যাক, পঞ্চায়েত নির্বাচনে সমীক্ষা অনুযায়ী কি ফলাফল হতে পারে এই জেলায়?
ব্যাংককে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে 2 টি সোনা সহ 4টি পদক জিতলেন বাংলার ছেলে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মোট আসন ৫৭
শাসক দল তৃণমূলের পক্ষে আসতে পারে ৩০ থেকে ৩২ টি আসন।
বিরোধী বিজেপির দখলে যেতে পারে ১২ থেকে ১৪ টি আসন।
এই জেলায় সিপিআইএম পেতে পারে ৭ থেকে ৯ টি আসন।
পাশাপাশি, সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, কংগ্রেসও এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ১ থেকে ২টি আসন পেতে পারে।
৫. জলপাইগুড়ি জেলাঃ
গত ২০১৮ সালে জলপাইগুড়িতে জেলা পরিষদের ১৯টি আসনের মধ্যে ১৯টি আসনেই জয়লাভ করেছিল TMC. এবারের নির্বাচনে সমীক্ষা বলছে, ২৪ টি আসনের মধ্যে TMC পেতে পারে ১৬ থেকে ২০টি আসন, বিজেপি ৪ থেকে ৮ টি, বাম ও কংগ্রেস ১টি।
৬. ঝাড়গ্রাম জেলাঃ
ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ১৯টি আওনের মধ্যে তৃণমূল পেতে পারে ১৩ থেকে ১৭টি আসন অন্যদিকে ২ থেকে ৬টি আসন ও বাম এবং কংগ্রেস পেতে পারে ০ থেকে ১টি আসন।
৭. হাওড়া জেলাঃ
হাওড়া জেলায় ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেতে পারে ২৭ থেকে ৩৫টি আসন, এদিকে বিজেপি পেতে পারে ৭ থেকে ১১ টি এবং বাম কংগ্রেস পেতে পারে ১ থেকে ৩টি আসন।
৮. বাঁকুড়া জেলাঃ
বাঁকুড়ার জেলা পরিষদের ৫৬ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেতে পারে ৩৭টি, গেরুয়া শিবির পেতে পারে ৯ থেকে ১৫টি, বাম কংগ্রেজ পেতে পারে ০ থেকে ৩টি আসন।
৯. আলিপুরদুয়ার জেলা
আলিপুরদুয়ারের ১৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেতে পারে ৪ থেকে ৮ টি আসন, বিজেপি পেতে পারে ১০ থেকে ১৪ টি ও বাম ও কংগ্রেসের ০ থেকে ১টি।
আরও পড়ুন, বিপুল হারে বাড়লো সুদের হার, টাকা বিনিয়োগের সুবর্ণ সময়।
তবে একটা কথা বলে রাখা দরকার, জেলাওয়ারি বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা এবং সমীক্ষক সংস্থার করা পঞ্চায়েত নির্বাচনের সমীক্ষার ফলাফল এখানে দেওয়া হল। কোনো সমীক্ষার ফলাফলই ১০০% ঠিক নয়। সেক্ষেত্রে একটা আভাস দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আসল ফলাফলের জন্য ১১ই জুলাই মঙ্গলবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনার দিকেই নজর রাখতে হবে। এবং এই ফলাফল চুড়ান্ত নয়, তাই এটা নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া কাম্য নয়।