Dearness Allowance – পশ্চিমবঙ্গের DA নিয়ে বড় খবর, বিধানসভায় আলোচনা।
বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) নিয়ে মামলা, বিক্ষোভ, অনশন ও আন্দোলন কিছুই করতে বাকি রাখেননি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মী ও শিক্ষকেরা। এদিকে চলতি বছর থেকেই ৩% ডিএ ঘোষণা হয়েছে। তবে AICPI হারে বা কেন্দ্রীয় মূল্যসূচক হারে পার্থক্য এখনও অনেক বেশি। আর সেই আন্দোলন কে রসদ যোগাতে এবং বকেয়া ডিএ আদায় করতে এবার পাশে দাড়ালেন বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
West Bengal Dearness Allowance news
কার্যত হতাশ হয়ে পড়া সংগঠনকে তুলে ধরার চেষ্টা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। DA আন্দোলনের পিছনে যে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস সহ বিরোধীদলগুলির ইন্ধন রয়েছে বলে একাধিকবার অভিযোগ তুলেছে শাসক দল। তাদের অভিযোগ ডিএ আন্দোলনকে উসকে দিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার ব্লু প্রিন্ট রয়েছে। আর এদিন শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে ডিএ আন্দোলন কারীদের হয়ে ফের সরব হতে দেখা গেল।
বিধান সভায় বকেয়া ডিএ প্রসঙ্গ
রাজ্য বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিধানসভার অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে সরব হন। বকেয়া DA নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। বহু কিছু আন্দোলন করার পরেও যখন তারা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি, স্বাভাবিকভাবেই অনশন কর্মসূচী বা অনস্থান প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে বর্তমানে বকেয়া DA মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।
এবার বিধানসভার অধিবেশনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, কেন্দ্রীয় হারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ দিতেই হবে। অধিবেশনে সরব হওয়ার পরে সাংবাদিকদের সামনাসামনি হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনার শিকার। কেন্দ্রীয় হারে বকেয়া ডিএ মেটাতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি কর্মচারীদের সংসার চলছে না। টানাপোড়েন রয়েছে। কষ্টের মধ্যে রয়েছেন তারা। রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনার্সরা DA আর DR পাচ্ছেন না। সুপ্রিম কোর্টে DA মামলা চলছে। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে রাজ্য সরকার বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করে। যত দ্রুত সম্ভব সরকারি কর্মচারীদের DA মেটাতেই হবে। সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে বারবার Dearness Allowance মামলা পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
আর শুভেন্দুর এই বক্তব্যের পরেই কার্যত নতুন করে অক্সিজেন যুগিয়েছে DA আন্দোলনকারীদের একাংশের। কাকতালীয়ভাবে এই বক্তব্যের পরই নয়া কর্মসূচীর চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে বহু অবস্থান বিক্ষোভ ধর্মঘট স্ট্রাইক করার পরেও বকেয়া Dearness Allowance আদায় করতে পারেননি তারা। দিল্লিতে গিয়েও দরবার করে এসেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
এদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারের চাকরি করে কেন্দ্রীয় হারে DA দাবী করা যুক্তিসঙ্গত নয়। ফলে কেন্দ্রীয় হারে বকেয়া Dearness Allowance দেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্য সরকারের অভিযোগ, এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের ধারাবাহিক বঞ্চনা চলছে। রাজ্যের বিভিন্ন খাতে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে মোদি সরকার। এর একমাত্র কারণ রাজনৈতিক।
এতে কোনো হিসাব নিকাশ দেওয়ার ব্যাপার নেই। কোনো প্রশাসনিক বা সরকারি (Government Subject) বিষয় নেই। এটা এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। আর তার সঙ্গে রয়েছে পশ্চিমবাংলায় দাঁড়িয়ে BJP, CPIM, Congress এর মত বিরোধী দলগুলোর বকেয়া ডিএ আন্দোলনকারীদের ইন্ধন দেওয়া। যদিও তাতে এখনও পর্যন্ত তারা সফল হতে পারেননি।
কলকাতা হাইকোর্টের তরফে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া DA মিটিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। রাজ্য সরকার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি (SLP) দাখিল করে। চলতি জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া ডিএ মামলা শুনানির জন্য উঠলে সেখানে রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি জানান, মামলাটির নিষ্পত্তি করতে সময় লাগবে। আর তারপরেই এই মামলার শুনানি আরো প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই একেবারে হতাশ হয়ে পড়েছেন Dearness Allowance আন্দোলনকারীরা।
আরও পড়ুন, বকেয়া হাজার হাজার টাকা ঢুকছে কোটি কোটি গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টে, আপনি পেয়েছেন কি?
আর তখনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর এই বক্তব্য DA আন্দোলনকারীদের বাড়তি মনোবল যোগাবে ধারনে সরকারি কর্মচারীদের একাংশের। এদিকে সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে বলা হচ্ছে, আইনসভায় এই বিষয়টি তোলার জন্য বিরোধী দলনেতার কাছে কৃতজ্ঞ। বকেয়া DA মেটানোর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করা হচ্ছে। তবে যেহেতু সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। ফলে সরকারের কিছু করার নেই। শুভেন্দু অধিকারী যে ডিএ আন্দোলনের পাশে রয়েছেন, তার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই।
আরও পড়ুন, প্রাথমিকে 2016 সালের পর নিয়োগ পাওয়া সমস্ত শিক্ষকদের তালিকা চাইলো আদালত।
এই প্রসঙ্গে আবার সরকারি কর্মচারীদের আরেক সংগঠন সরকারি কর্মচারী পরিষদের তরফে বলা হচ্ছে, শুভেন্দু যথার্থই বলেছেন। উনি যে আমাদের পাশে রয়েছেন, তা এটা থেকেই পরিষ্কার। যদিও বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া ডিএ মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন আর মামলা চলার কারণে স্বভাবতই কর্মীরা একেবারে হতাশ হয়ে পড়েছেন। সেখানে অন্তত শুভেন্দুর এই বক্তব্যে একটু হলেও উজ্জীবিত হবেন তারা।