লটারি টিকিট কাটলেও পাবেন না পুরষ্কার, যদি এই ভুল করে থাকেন।

লটারি টিকিট (Lottery Ticket) কাটলেও নাকি মিলছে না পুরস্কার। এমনটা অভিযোগ উঠেছে পশ্চিমবঙ্গে। সাধারণ মানুষ সঠিক দাম দিয়ে লটারির টিকিট ক্রয় করছেন। কিন্তু সেই টিকিটের নম্বরই নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না পুরস্কারের লিস্টে। ফলে পুরস্কারও জুটছে না সেই সমস্ত ক্রেতাদের ভাগ্যে। অনেকের আন্দাজ টিকিট গুলি নিয়ে নাকি খেলাই হচ্ছে না। তাহলে পুরস্কারের নাম আসবে কোত্থেকে।

লটারি টিকিট নিয়ে জালিয়াতি

এ নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গেছে রাজ্যে। প্রশাসনের তরফে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে জানা গেছে এর পেছনে রয়েছে এক বড় জালিয়াতি চক্র। যারা কিনা জাল লটারি টিকিট বিক্রি করে মানুষদের থেকে টাকা লুটে নিচ্ছে। কিন্তু সেই টিকিটগুলির খেলা না করে পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে না সেই সমস্ত ক্রেতাদের।

পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলে এই লটারি দুর্নীতি শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেখানকার মানুষদের অভিযোগ বেশ কিছুদিন ধরেই তারা বাজারে গিয়ে ক্রয় করছেন লটারি টিকিট। প্রতিটি টিকিটে সঠিক দাম পর্যন্ত দিচ্ছেন তারা। কিন্তু তাদের টিকিটের নম্বর কোনভাবেই প্রকাশ করা হচ্ছে না পুরস্কারের তালিকায়। সাধারণ মানুষ বিষয়টিকে ভাগ্যের খেলা বলে বিবেচনা করে আবার পরবর্তীকালে কাটছেন একগুচ্ছ লটারি টিকিট।

Lottery Ticket Scam

ফলে এইভাবে লোভে বশবর্তী হয়ে ক্রমশ সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষেরা। কিন্তু তাতে লাভ হচ্ছে না তাদের কারোরই। এই চক্রে প্রতারিতদের তরফ থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছিল কুলটি পুলিশ থানার কাছে। তারপর শুরু হয় তদন্তের কাজ। তদন্ত করে জানা যায় যে এই জালিয়াতি চক্রটি নাকি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে ঝাড়খন্ড থেকে। আসানসোল দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘বহু মানুষ এই জাল লটারির জন্য প্রতারিত হচ্ছিলেন। বহু অভিযোগ পাচ্ছিলাম।

তিনি আরও জানান, গোপন ভাবে এই লটারি টিকিট বিক্রি হত। কুলটি থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চার জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের হেফাজতে নিয়ে বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালাবে পুলিশ।।’’ প্রশাসনের তরফে এই ধৃত চারজন অপরাধীর নামও জানানো হয়েছে। এদের নাম যথাক্রমে অভিজিৎ মাজি, শচীন মাজি, দিলীপ বল ও সুরজ নুনিয়া। তাদের বাড়ি কুলটি থানা এলাকাতেই।

রেশন কার্ড (Ration Card)

তবে আসানসোলে এই জাল লটারির কান্ড কোন নতুন ঘটনা নয় বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। চলতি বছরের গত জানুয়ারি মাসে পশ্চিম বর্ধমানের তিনটি এলাকা যথাক্রমে রানীগঞ্জ, আসানসোল এবং জামুরিয়া অঞ্চল গুলিতে একইভাবে শুরু হয় জাল লটারি টিকিটের ব্যবসা। তখনো এর মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছিল বহু মানুষ। পুলিশ মারফত তদন্ত চালিয়ে তখন জানা গিয়েছিল যেখানে একটি লটারি টিকিট বিক্রি হয় মাত্র ৬ টাকায় সেখানে সেই টিকিটের দাম ধার্য করা হয়েছিল ১০ টাকা প্রতি টিকিট কিছু। ফলে লোভের বশে পড়ে মানুষ সর্বহারা হচ্ছিলেন এই জাল লটারির কান্ডে।

আরও পড়ুন, বাংলার নতুন প্রকল্প। টাকার অভাব থাকবেনা। গ্রামে থাকলে 255 টাকা ও শহরে থাকলে 300 টাকা করে পাবেন, প্রতিদিন।

যদিও এই দুর্নীতির চক্রে জড়িত ১২ জন অপরাধীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল সেই মুহূর্তে। এবারেও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো। তবে এই সমস্ত দুর্নীতির চক্রগুলি বেশিরভাগই বিদেশ থেকে পরিচালনা করা হয় বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনের অফিসাররা। তারা এও বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে লুকিয়ে থাকা এই দুর্নীতি গুলিকে খুঁজে বার করার। যাতে সাধারণ মানুষ কে আর প্রতারিত না হতে হয় এই জালিয়াতি চক্র গুলির দ্বারা।

আরও পড়ুন, লটারি জিততে চান? এই নিয়মে টিকিট কাটুন।

লটারি টিকিট ক্রেতাদের কি করণীয়?

টিকিট টা জাল কিনা এটা সাধারণ মানুষের কাছে বোঝা কঠিন। তাই যেকোনো নির্দিষ্ট দোকান থেকে লটারি টিকিট কেনা উচিত। এবং সেই দোকানে কেউ পুরষ্কার পাচ্ছে কিনা, সেই বিষয়ে নজর রাখা উচিত। বর্তমানে জাল করে হুবহু একই রকম দেখতে টিকিট প্রিন্ট করে ফেলছে জালিয়াতেরা। তাই নির্দিষ্ট দোকান থেকে লটারি টিকিট কেনা উচিত।
Written by Nabadip Saha.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button