বকেয়া ডিএর দাবিতে, DA Strike পশ্চিমবঙ্গের কর্মীদের চরমপন্থা, স্কুল কলেজ, অফিস, হাসপাতাল সব বন্ধ।
বকেয়া ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মীদের চরম সিদ্ধান্ত অর্থাৎ DA Strike কি অচল করে দেবে বর্তমান সরকারের কার্যকলাপ! কি হতে চলেছে রাজ্যের ভবিষ্যৎ। সরকারি কর্মীরা হলেন সরকারের সমস্ত কাজের প্রধান হাতিয়ার। তবে সরকার কেন তার কর্মীদের দাবি পূরণে মন পাচ্ছেন না, তা নিয়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। কর্মীরা নিতে চলেছেন DA Strike এর বড় সিদ্ধান্ত। আজকের আলোচনায় জেনে নেওয়া যাক।
রাজ্য সরকারকে সঠিক সিদ্ধান্ত জানাতে বাধ্য করতে চলেছে সরকারি কর্মীদের DA Strike.
ইতিমধ্যেই সরকারি কর্মীরা বকেয়া ডিএ পাবার দাবি পূরণে আইনি লড়াইতে জয়ী হয়েছেন। তবে মহামান্য কোলকাতা হাইকোর্ট সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেবার কথা জানালেও সরকার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই রায় পালনে ব্যার্থ হয়েছে। বরং তারা বর্তমানে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয়েছেন SLP মামলা নিয়ে। তবে সরকারি কর্মীদের রাস্তার আন্দোলন আরো জোরদার হচ্ছে।
রাজ্যে সরকারী কর্মচারীরা তাদের পাওনা বকেয়া নিয়ে অনেক দিন ধরেই মিছিল করার কথা ভেবে আসছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোলকাতা পুলিশ তাদের প্রাথমিক ভাবে বাধা দিলেও, মহামান্য হাইকোর্ট তাঁদের অনুমতি দেয় এই মিছিল করার। শুধু হাইকোর্টের তরফে বলা হয়েছিল যে, তারা যেন কোনো জায়গায় অবস্থান বিক্ষোভ না করেন। তবে একান্তই যদি বিক্ষোভ করতে হয়, তাহলে তারা যেন শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
আর সেই নির্দেশ মতোই সরকারী কর্মীরা সেই মিছিল এবং অবস্থান বিক্ষোভ করার সিদ্ধান্ত নেন। রাজ্যের সরকারি কর্মীরা একত্রিত হয়ে 28 টি সংগঠন মিলে তৈরী হয়েছে। তৈরী হয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। সেখানে রয়েছে সরকারি কর্মচারী, আধা সরকারি কর্মী, শিক্ষক, শিক্ষকর্মী, ডাক্তার, নার্স, পুরসভা কর্মী সহ সমস্ত সংগঠন। এই যৌথ মঞ্চের ডাকেই চলছে এই আন্দোলন।
সরকারি কর্মীদের এই আন্দোলনের দাবি স্পষ্ট। সরকারি কর্মীদের সংখ্যা রাজ্যের মাত্র 4 শতাংশ। এই সরকারি কর্মীদের পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে বকেয়া সহ এই বর্তমান বেতন কমিশনে কেন্দ্রের তুলনায় বকেয়া 35 শতাংশ। পেনশন প্রাপক রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধি হলেই বাড়ে বেতন। সমস্ত জিনিসপত্রের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। সরকারি কর্মীদের এই আন্দোলনের মূল দাবি, শূন্যপদে নিয়োগ এবং সরকারি কর্মীদের বকেয়া মেটানো।
ডিএ আন্দোলন নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে ডিএ নিয়ে সুর চড়াবে বিজেপি’। অন্যদিকে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম মন্তব্য করেছেন, ‘সরকারি কর্মীরা নয়, কিছু সিপিএমের লোক ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছে।’ তবে এই বিষয়ে ভাস্কর ঘোষ মহাশয় জানিয়েছেন, রাজ্যের মন্ত্রীর এই দাবির কোন যুক্তি নেই। রাজ্যের সরকারি কর্মীরা সরকারের কাছে তাদের আবেদন জানাতেই নেমেছেন এই আন্দোলনে। তাদের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ একটি অরাজনৈতিক সংগঠন।
রাজ্যের সমস্ত সরকারি কর্মীরা তাদের দাবি মেটানোর জন্য আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে। এই মঞ্চের রাজ্য কনভেনার ভাস্কর ঘোষের বক্তব্য, “আগামী 1 ফেব্রুয়ারি বেলা 2 টো থেকে বিকাল 4 টে পর্যন্ত, সমস্ত সরকারি বিভাগ, সরকারি হাসপাতাল, সরকারি স্কুল, সমস্ত জায়গায় পালিত হবে। এই মঞ্চ থেকে আমরা তার (DA Strike) ডাক দিলাম। সমস্ত সরকারি বিভাগ এগিয়ে আসুক। তাতে কাজ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব। তবে কোনও জরুরি পরিষেবা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকেও নজর থাকবে।”
এছাড়াও সার্ভিস ডক্টর ফোরামের পক্ষ থেকে চিকিৎসক সজল ঘোষ একই ধরণের ডাক (DA Strike) দিয়েছেন কর্মীদের উদ্দেশ্যে। তবে জরুরি পরিষেবা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। DA Strike সংক্রান্ত বিষয়ে আপনি আপনার মতামত আমাদের জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে। পরবর্তী আপডেট পেতে দেখতে থাকুন আমাদের প্রতিবেদন। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.
সরকারি কর্মীদের সাথে সমাজের অন্য মানুষদের মধ্যে বিশাল অর্থনৈতিক ফারাক হবার জন্য ডিএর দাবির ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের বিরক্ত প্রকাশ পায়। সাধারণ মানুষের কাছে সরকারি কর্মীরা একটা হিংসার কেন্দ্র হয়ে গেছে।