রাজ্যে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনীর পরীক্ষায় হঠাৎ বদল! উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের বিশেষ সিদ্ধান্ত। কী কী পাল্টে যাচ্ছে? দেখে নিন।
শুরু হতে চলেছে রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্র্যাক্টিক্যাল। এর মধ্যেই রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সিদ্ধান্তে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় আসছে একাধিক বদল। এই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। বর্তমানে তা বাস্তব রূপ নিতে চলেছে। কি কি বিষয়ে আসছে পরিবর্তন? কবে থেকে চালু হবে? সব খুঁটিনাটি বিষয়ে আমাদের আকের এই প্রতিবেদন। বিস্তারিত জেনে নিন।
সেমিস্টার সিস্টেমের সুত্রপাত হতে চলেছে রাজ্যের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেনিতে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের অনুমোদনের অপেক্ষামাত্র।
রাজ্যে সব কিছু ঠিকঠাক ভাবে এগোলে আগামী শিক্ষাবর্ষ তথা 2023 থেকেই পশ্চিমবঙ্গে তথা West Bengal – এ কলেজ লেভেলের পরীক্ষার (Exam) মতো করেই সেমিস্টার সিস্টেমে (Semester Basis) হবে উচ্চ মাধ্যমিক তথা XI-XII শ্রেণীর সকল পরীক্ষা। সেক্ষেত্রে পুরো সিলেবাসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে। সেই অনুসারে সিলেবাস শেষ হতেই দিতে হবে সেমিস্টার পরীক্ষা। অবশেষে সমস্ত সেমিস্টারের নম্বরের হিসেবেই তৈরি হবে ফাইনাল রেজাল্ট।
এক্ষেত্রে পড়ুয়াদের মধ্যে পড়াশোনার প্রতি গুরুত্ব আরও বাড়বে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের। এই নীতির ফলে বইয়ের কোন অংশই পড়ুয়াদের বাদ দিয়ে পড়ার সুযোগ থাকছে না। এই বিষয়ে অবশ্য সঠিক গাইড লাইন কেমন হতে চলেছে, তা এখনো সামনে আসে নি। তবে কিছু তথ্য এলে অবশ্যই আমরা তা তৎক্ষণাৎ তুলে ধরবো।
এই পদ্ধতি মূলত কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষানীতিরই বহিপ্রকাশ মাত্র। মূলত কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির সাথেই সামঞ্জস্য রেখেই এই পদ্ধতির দিকে এগোচ্ছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। এরই মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক নিয়ে খসড়া প্রস্তাব জমা পড়ে গিয়েছে রাজ্য মুখ্য সচিবের দরবারে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, গোটা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে মোট 2টি পরীক্ষা। 2023-2024 শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই সিস্টেম চালু হবে।
সেমিস্টার সিস্টেম আনার বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের মাননীয় সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “গোটা বিষয়টি প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। আমাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সেমিস্টার সিস্টেম নিয়ে আসা। সিবিএসই-বা অন্যান্য দেশেও ক্লাস টুয়েলভ-এর পরীক্ষা সেমিস্টার সিস্টেমে নেওয়া হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এই পরিকল্পনার পথে আমরা হাঁটছি। রাজ্য সরকারের অনুমোদন পেলেই তা কার্যকর করা হবে”।’
রাজ্যের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে সেমিস্টার সিস্টেমের মাদ্যমে পরীক্ষা। ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতির প্রতিফলন দেখা গেছে। সুতরাং এই পদ্ধতির বেশ গুরুত্ব অনেক আগেই প্রকাশ পেয়েছে রাজ্যে তথা সারা দেশে। এবারে স্কুল স্তরেও আনা হচ্ছে এই পদ্ধতি।
এক্ষেত্রে সংসদ সভাপতির যুক্তি, “ছাত্রছাত্রীদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মূল্যায়ন শুধুমাত্র একটি মাত্র পরীক্ষার মাধ্যমে করা হলে অনেক সময় সমস্যা তৈরি হয়। অনেক ছাত্র-ছাত্রীদের নানান রকম অসুবিধা থাকে। সেক্ষেত্রে বছরে দু’টি পরীক্ষা হলে ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন এবং পঠনপাঠনের গুণগত মান আরও উন্নত জায়গায় পৌঁছাবে”। তবে গোটা বিষয়ে পরেই আনাবে পর্ষদ।
এক্ষেত্রে আরও জানা যাচ্ছে যে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও আনা হতে পারে OMR Sheet এর মাধ্যমে পরীক্ষা। তবে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির সাথে আলোচনা চলছে। তবে জানা গেছে যে, একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা হবে OMR Sheet পদ্ধতিতে আর দ্বাদশে হবে লিখিত রূপে। কারণ এরপরেই বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরীক্ষা পদ্ধতি পরিচালিত হয় OMR Sheet এর মাধ্যমে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কাউন্সিল অফ হায়ার সেকেন্ডারি এডুকেশন বা WBCHSE এই বছরের পরীক্ষার (Exam.) জন্য গত জুন মাসেই দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার তারিখসহ সূচীপত্র প্রকাশ করেছে। পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডের শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা আগামী 14ই মার্চ থেকে 27শে মার্চ, 2023 পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
পরিবারের আয় একটু কম হলেই পড়াশোনার সব খরচ দিচ্ছে ষ্টেট ব্যাংক, আবেদন করলেই পাবে এই স্কলারশিপ।
তবে ব্যবহারিক পরীক্ষাগুলি 2022 সালের ডিসেম্বর থেকে অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে 5ই ডিসেম্বর 2022 তারিখ থেকে 21শে ডিসেম্বর, 2022 পর্যন্ত রীতিমতো পরীক্ষা চলবে৷ ব্যবহারিক পরীক্ষাগুলি ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের সংশ্লিষ্ট স্কুলেই পরিচালিত হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের তারিখগুলি নিজস্ব স্কুল থেকেই জানিয়ে দেওয়া হবে৷ সেই অনুসারে হবে পরীক্ষা।
তবে জানা যাচ্ছে যে এই সেমিস্টার সিস্টেমে (Semester Basis) পরীক্ষার বিষয়ে খুব দ্রুতই নিজেদের সিদ্ধান্ত পাকাপাকি করে দেবে পর্ষদ। শিক্ষা, স্কলারশিপ, চাকরি, স্টাইপেন্ড সংক্রান্ত নানা বিষয়ের আপডেট খবর পেতে আমাদের সাথে থাকার অনুরোধ জানাই। এছাড়াও আপনার কিছু জ্ঞ্যাতব্য বিষয় থাকলে কমেন্ট বক্সে আমাদের জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.