HS Exam – উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা আর হবেনা! বরং পরীক্ষা হবে নতুন পদ্ধতিতে। কীভাবে জেনে নিন।

এতকাল যাবৎ আমরা দেখে এসছি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক (HS Exam) একবারই বড়ো পরীক্ষা দিতে হয়। সেটা হয় ফেব্রুয়ারি ও মার্চের দিকে। এই দুটোই জীবনের প্রথম বড়ো পরীক্ষা। নিজের স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে অন্য অচেনা স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়। বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই জাতীয় শিক্ষানীতির বিভিন্ন স্তরে একটা জল্পনা উঠছিল HS Exam বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বদলে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু করা হোক এবার পাকাপাকি ভাবে সেই সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দিল রাজ্য সরকার।

HS Exam will be Start in Semester System

সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ২০২৪ – ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে। একাদশ শ্রেণীতে শুরু হবে ২০২৪ – ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে। অর্থাৎ এবার যারা মাধ্যমিক পাশ করে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হলো তাদের সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিতে হবে। আর ২০২৫ – ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে একই ভাবে দ্বাদশ শ্রেণীতে শুরু হবে।

মাধ্যমিক পরীক্ষা পদ্ধতি কেও একই রকম সেমিস্টার পদ্ধতি শুরু করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্ত রাজ্য সরকার মাধ্যমিক পরীক্ষা প্রথম বোর্ড পরীক্ষা তাই সেটাকে আগের নিয়ম অনুযায়ী রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শুধু একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষা পদ্ধতি হবে সেমিস্টার ভিত্তিক। অর্থাৎ বছরে একটা পরীক্ষা নয়, এবার থেকে ৬ মাস অন্তর হবে ২ পরীক্ষা।

এরপর আগামী বছর থেকে যখন দ্বাদশ শ্রেণিতে সেমিস্টার পদ্ধতি চালু হয়ে গেলে HS Exam বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বলে আর কিছু থাকবে না। ৬ মাস অন্তর মোট ২ পরীক্ষায় বসতে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের। সেই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে দ্বাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা বা উচ্চমাধ্যমিকের বা HS Exam এর ফল নির্ধারিত হবে।

আলাদা করে HS Exam বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হবে না। রাজ্য সরকারের মতে কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি থেকে বেরিয়ে তারা নিজেদের মতন শিক্ষা নীতিকে জোরদার করতে চলছেন। আশা করা যাচ্ছে ২০২৪ থেকে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন শিক্ষানীতি চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে।

পরীক্ষার ধরন
একটি পরীক্ষা নেওয়া হবে নভেম্বরের দিকে আরেকবার নেওয়া হবে মার্চের দিকে। দুটো পরীক্ষার ফলাফল দেখে গড় নম্বরের ওপর মার্কশিট তৈরি করা হবে। অন্যদিকে CBSC তে এমনই সেমিস্টার পদ্ধতিতে দুবার HS Exam বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা সংসদ তাদের অনুকরণেই দুবার পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে CBSC তে দুটো পরীক্ষার মধ্যে যেটাতে ভালো নম্বর পাবে সেটাকেই গ্রাহ্য করা হয়।

প্রশ্নের ধরন
প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় (HS Exam) মাল্টিপল টাইপের MCQ প্রশ্ন থাকবে। যেটা OMR শীটে দিতে হবে। দ্বিতীয় পরীক্ষায় সাদা কাগজে উত্তর দিতে হবে। সংক্ষিপ্ত ও বড়ো প্রশ্ন থাকবে। তবে প্রাকটিক্যাল এক্সাম একবারই হবে বলে জানা যাচ্ছে। কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তির মতে এই সেমিস্টার সিস্টেমে পরীক্ষা নেওয়া যুক্তিপূর্ণ মনে করছেন না।

 উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট কবে দেবে? এক ক্লিকে জেনে নিন।

কারণ সবসময় এই পদ্ধতি ভালো ফলাফল দেয়না। যেমন কলেজ গুলোতেও অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। দুবার এক্সামের ফলে তাদের সিলেবাস তৈরিতে সমস্যা হয়। এছাড়া নম্বর বিভাজনের দিকটি ও সমস্যা দেখা দেয়। পড়ুয়াদের একটা বড়ো পরীক্ষার আগে যেমন পড়ায় চাপ থাকতো একাগ্রতা থাকতো দুবার পরীক্ষা হলে তারা পরীক্ষা গুলোকে হালকা ভাবে নেবে।

WBBSE - ডাব্লুবিবিএসসি

এছাড়া কেউ একবার পরীক্ষায় বা HS Exam এ ভালো রেজাল্ট করলে পরের বার খারাপ করলে তার গড় হিসাবে নম্বর দেওয়া হবে ফলে সবার গুণগত মান সেদিক থেকে সঠিক নির্বাচন হবে কিনা সেই ব্যাপারে সন্দেহ আছে। অন্যদিকে, শিক্ষা সংসদের মতে এখন স্কুল পাশ করলেই অনেক চাকরি পরীক্ষা দেওয়া যায় আর সেখানে MCQ টাইপের প্রশ্ন থাকে। তাও OMR শীটে।

সরকারের তরফে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের দেওয়া হবে উপহার! স্কুল থেকে কবে পাবে? জানুন

স্কুল জীবনে এই প্রশ্ন প্যাটার্নের সাথে যেহেতু পরিচিতি থাকে না তাই চাকরি পরীক্ষায় তাদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। স্কুল জীবন থেকেই যদি এইভাবে পরীক্ষা দেওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে ভবিষ্যতে পড়ুয়াদের অনেক সুবিধা হবে। সেই কথাই মাথায় রেখে এহেন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এখন দেখা যাক এর প্রভাব কতটা সুফল দেয় ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশুনায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button