বিপাকে স্কুলের মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ুয়ারা! রাজ্য সরকার চাইছে নথি। সমস্যায় শিক্ষকেরাও। বিস্তারিত দেখুন।
রাজ্য সরকার (WB Govt.) বিভীন্ন সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে সর্বদা পড়ুয়াদের পাশেই থাকে। রাজ্যের মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ুয়াদের এবারে নতুন করে নির্দেশিকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই সুবিধা পেতে গেলে খুব শীঘ্রই জমা দিতে হবে নথি। বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সামনেই রাজ্যের মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা। সকলের প্রস্তুতি তুঙ্গে।
দেশ ডিজিটাল পদ্ধতিতে বেশ আপডেট হচ্ছে। তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর অভিনব উদ্যোগে রাজ্যে মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ুয়াদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হল ট্যাব। সরকার পড়াশোনায় গতি আনতে এই উদ্যোগ নিয়েছিল অনেক আগেই।
তবে মহামারীর সময় থেকে এই সুবিধা চালু হলেও আজও তা উচ্চ-মাধ্যমিক (HS) পড়ুয়াদের জন্য অব্যহত আছে। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একটি সভা থেকে মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক (HS) পড়ুয়াদের সুবিধা দিতে ট্যাব দেবার কথা আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন। তবে এবারে কি করতে হবে?
তবে সেই সময়ে রাজ্যের উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ুয়াদের (HS School Students) ট্যাব দিতে গিয়ে সরকার বেশ সমস্যায় পড়েছিল। রাজ্যে মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক স্তরে প্রচুর পড়ুয়া আছে। কিন্তু সেই সময় এক বারে বাজারে লক্ষ লক্ষ ট্যাব পায়নি রাজ্য সরকার (WB Govt.). তাই ট্যাবের বদলে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার করে টাকা পাঠিয়েছিল রাজ্য।
এখন সেই টাকার ইউসি বা ইউটিলাইজেশান সার্টিফিকেট চেয়ে পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। আর সেখানেই বিপাকে পড়েছে রাজ্যের উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ুয়ারা। কেননা অধিকাংশ পড়ুয়াই ট্যাব না কিনেছে অল্প দামের মোবাইল। এই নিয়েই সমস্যা।
আবার অনেক উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ুয়ারাই সেই টাকা অন্য কোন কাজে খরচ করে ফেলেছেন। সরকারি প্রকল্পে কোন টাকা এলে তার উপযুক্ত ব্যবহার হচ্ছে কিনা, সেই বিষয়ে সরকারকে জমা করতে হয় ইউসি। এবারে কোথা থেকে তাঁরা দাখিল করবে বিল? এই নিয়েই বিপাকে পড়ে গিয়েছে মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ুয়ারা।
লকডাউনের জন্য রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলি বন্ধ ছিল প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময়। ওই সময়কালে পড়াশোনা চালানোর একমাত্র মাধ্যম ছিল অনলাইন পদ্ধতি। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে যাতে শিক্ষার গতি স্তব্ধ হয়ে না পড়ে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী 2020 সালেই রাজ্যের দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াদের ট্যাব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন।
‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে সেই ট্যাব দেওয়ার কাজ শুরু হয়। 2020 সালে মোট 8 লাখ 76 হাজার পড়ুয়াকে ট্যাব দেওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে। 2021 সালেও ট্যাব দেওয়া হয় দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াদের। গতবছর এই সংখ্যা ছিল 8 লক্ষ 94 হাজার। কিন্তু গত বছর ওই সংখ্যক ট্যাব বাজারে পাওয়া যায়নি।
তাই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে 10 হাজার করে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই টাকা দিয়ে ট্যাব কিনে পড়ুয়ারা তার বিল জমা দেবে নিজ নিজ স্কুলে। তারপর সেখান থেকে ইউসি আসবে রাজ্য সরকারের হাতে।
এবারেও রাজ্য সরকার মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ুয়াদের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়াদের হাতে ট্যাব তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের পাশাপাশি বৃত্তিমূলক বা ভোকেশনাল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের এবং মাদ্রাসার পড়ুয়াদেরও ট্যাব দেওয়া হবে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য নয়া জরুরি ঘোষণা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে,
তার জন্য কারিগরি শিক্ষাদপ্তর থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষার স্কুলগুলিকে এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ থেকে রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিক (HS) স্কুলগুলিতে চিঠি পাঠিয়ে নির্দিষ্ট প্রোফর্মায় ছাত্র-ছাত্রীদের নাম, ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত তথ্য প্রভৃতি জমা দিতে বলা হয়েছে।
মাদ্রাসার পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও মাদ্রাসা বোর্ড এই পথে হেঁটেছে। একই সঙ্গে এই 3টি বোর্ড থেকেই গতবছর যারা ট্যাব কেনার টাকা পেয়েছিল সেই টাকার ইউসি সার্টিফিকেট (Tab Certificate or Bill) চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা হচ্ছে গতবছর যারা দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়া ছিল তাঁদের অনেকেই এইবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে দিয়েছে।
বদলে গেল মাধ্যমিক পরীক্ষার নিয়ম, এখনই না করলে পরীক্ষায় বসতে পার না।
ফল বার হয়ে যাওয়ার পরে তাঁদের সিংহভাগের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও যোগাযোগই নেই। এই অবস্থায় ইউসি কোথা থেকে জোগাড় হবে তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে তেমনি যারা ট্যাব (Tab Certificate or Bill) কেনার টাকা অন্য খাতে খরচ করেছে তাঁরা কোথা থেকে ইউসি জমা দেবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
সব মিলিয়ে পড়ুয়ারা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ বেশ বিপাকে। তবে কিভাবে হবে এই সমাধান? বিভিন্ন আপডেট নিউজ পেতে আমাদের সাথে থাকুন। আপনার কিছু জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে তা লিকে পাঠান আমাদের। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai