বেতন

ডিসেম্বরেই সব শেষ। সরকারি কর্মীরা আর পূর্ণ বেতন পাবেন না। নতুন বছরের আনন্দে যখন মাতবে সবাই, তখন হয়তো সরকারি কর্মীদের জন্য আসতে চলেছে এক খারাপ খবর। সরকারি কর্মীদের বেতন বন্ধ হতে চলেছে। তাও আবার খুব শীঘ্রই। এই বেতন বন্ধ নিয়ে কি তথ্য জানা যাচ্ছে, তা আলোচনায় দেখে নেওয়া যাক।

রাজ্যের বেহাল পরিস্থিতির মধ্যের বেতন বন্ধ ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

এমনই বিরল এক ভবিষ্যৎ বানী দিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী দলনেতা শ্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি যেন বিরোধী দলের হয়ে সরকারের অর্থনীতির হিসেব কষে দিলেন। আর এটা শুধুমাত্র তার মুখনিশ্রিত বানিই নয়, রীতিমতো হিসেব কষে দিলেন পুরো বিষয়টা।

তার বক্তব্য অনুযায়ী, কেন্দ্রের কাছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার তার ঘাটতি মেটানোর জন্য আর্জি জানিয়েছে। এক্ষেত্রে তারা কেন্দ্রে কাছে 10 হাজার কোটি টাকার ঋণ চেয়েছে। রাজ্যের সমস্ত প্রকল্প চালানো, সরকারি কর্মীদের বেতন ইত্যাদি চালাতে প্রচুর টাকার দরকার। এক্ষেত্রে কেন্দ্র টাকা না দিলে রাজ্য মহা সমস্যায় পড়ে যাবে।

এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বাবু জানান যে সরকার নিষ্ক্রিয়। সরকারি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ডিএ এর জন্য দাবি, আন্দোলন করে কোন লাভ নেই। টাকা থাকলে তো বেতন দেবার চিন্তা করবে রাজ্য। এ রাজ্যের টাকা সব শেষ। পয়লা জানুয়ারীতে সরকারি কর্মীদের বেতন দেবার মতো টাকা নেই রাজ্যের অর্থ ভাণ্ডারে।

এতো দিনের রাজ্যের লোনের বোঝা বিশাল পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। পূর্বের সরকার থালাকালীন যেই পরিমান ঋণ ছিল সরকারের কাঁধে, তা এখন আরো বেড়েছে প্রায় 4 গুণ। তাই সরকার এর লোন নেবার সীমাও শেষ হয়েছে। এমতবস্থায় ডিএ দেবার তো কোন সম্ভাবনাই নেই। আর বেতনও বন্ধ হতে পারে।

একই সাথে রাজ্যের নিয়োগ নিয়েও কথা বলতে ছাড়েন নি তিনি। তিনি জানান, কলকাতা এর রাজপথে যারা দিন এর পর দিন অনশন করে চলেছে তাদেরকে চাকরি দেওয়া যাবে না। কারণ বেতন দেবার মতো টাকা নেই রাজ্যের কাছে। পুরোনো কর্মীদেরই দিতে পারছেন না ডিএ।

তিনি টুইট করে দাবি করেছেন, রাজ্যের ঋণ এর বোঝা এখন 6 লক্ষ কোটি টাকা। হিসেবে মাথাপিছু এক সদ্যজাতের মাথাতেও থাকছে 50 হাজার টাকার বেশি ঋণের বোঝা। এক্ষেত্রে মার্কেট থেকে আর কেউই সরকারকে ঋণ দেবে না। তিনি বলেন, এটা বিজেপি এর কথা নয়। বরং রীতিমতো সংবাদ মাধ্যমে একথার সত্যতা ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রত্যেক চ্যানেলে।

মমতার নতুন প্রকল্প বেশ সাড়া জাগালো দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পের প্রথম দিনেই। বিশদে দেখুন।

ফিসক্যাল রেসপনসিবিলিটি এন্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট এক্ট অর্থাৎ FRBM Act. যা তৈরী হয়েছিল 2003 সালে। এর নিয়মানুযায়ী রাজ্যের ঋণ নেবার একটি সীমা আছে। সেই সীমা ইতিমধ্যেই ছুঁয়ে ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গ। এরপরে আর ঋণ পাবার সম্ভাবনা নেই। এই বিষয়ে তিনি কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কে আর কোন ঋণ না দেবার অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি মাঝে মাঝে এমন নানা কথা বলে থাকেন। যদিও তার এহেন মন্তব্য যেন সবাই সবথেকে বেশি চমকে দিয়েছে। এখন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বেতন নিয়ে রীতিমতো ভাইরাল। এই ধরণের মন্তব্য এতটা তাক লাগলো কেন? এক্ষেত্রে বলা যায়, রাজ্য সরকারের নিজের কথাকেই একটু অন্য রকম ভাবে তুলে ধরলেন তিনি।

ডিএ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, জরুরী বৈঠক নবান্নে।

রাজ্যের সরকারের দলীয় বিভিন্ন নেতার বক্তব্যে অনেক বারই ফুটে উঠেছে রাজ্যের অর্থনৈতিক বেহাল পরিস্থিতির কথা। তাদেরই দলের এক নেতার বক্তব্য এমন ছিল যে, হাইকোর্ট বকেয়া ডিএ দেবার অর্ডার দিলেই সব হয় না। এক্ষেত্রে টাকা কোথা থেকে আসবে তাও বলে দেবার দরকার। এক্ষেত্রে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও তেমনি বললেন। তবু আরো একটু অন্যান্য তথ্য ও যুক্তি দিয়ে।

এদিকে আগামী 4 ই নভেম্বর, 2022 হল রাজ্য সরকারের হলফনামা জমার শেষ তারিখ। এরপরে ঐ হলফনামার ভিত্তিতে নিজেদের বক্তব্য জানাবেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠন। অবশেষে শুনানির দিন ধার্য্য হয়েছে 9 ই নভেম্বর, 2022. সেদিকে আমাদের নজর অবশ্যই থাকবে। এই বিষয়ে আপনার মতামত জানা কমেন্ট বক্সে। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.