Grade Pay – পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন বাড়ছে, বেন্দ্রীয় হারে বঞ্চনার অবসান।
রাজ্যের শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের Grade Pay বৃদ্ধির নির্দেশ।
সরকারি স্কুলের শিক্ষক এবং বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা প্রমোশন সহ যে সমস্ত সুবিধা পেয়ে থাকেন, সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত এবং পোষিত স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা সেই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পান না বলেই শিক্ষক সংগঠন অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অভিযোগ করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং পোষিত স্কুলের শিক্ষকেরা প্রমোশন সহ ইনক্রিমেন্টের (Grade Pay Promotion and Increment) সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এমনটাই অভিযোগ শিক্ষক সংগঠনের। যে সমস্ত সরকারি কর্মচারী এবং স্কুল শিক্ষকদের সরাসরি প্রমোশনের সুযোগ নেই, তারা ৮, ১৬ এবং ২৫ বছর চাকরি করার পরে একটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট (Grade Pay Increment) পেয়ে থাকেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সরকার পোষিত স্কুল, হিন্দু স্কুল, হেয়ার স্কুলের মত স্কুলে কর্মরত শিক্ষকদের প্রমোশনের সুযোগ থাকলেও সরকার পোষিত স্কুল এবং সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষক- শিক্ষিকারা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন।
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (PSC) মাধ্যমে সরকারি স্কুল এবং বিভিন্ন দপ্তরের চাকরিরত কর্মীদের নির্দিষ্ট সময় পর পর ফাংশনাল প্রমোশনের সঙ্গে কেরিয়ার অ্যাডভান্সমেন্ট স্কিম (Career Advancement Scheme) বা CAS চালু রয়েছে। যেহেতু সরকারি পোষিত স্কুল এবং মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষকরা এই সুযোগ এতদিন পাচ্ছিলেন না, তাই সেই CAS-এর সুবিধা পাওয়ার জন্য শিক্ষক সংগঠনের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
এবার সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর বি শরাফ সরকারি কর্মচারী এবং স্কুল শিক্ষকদের মতো সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং পোষিত স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের Grade Pay ৮, ১৬ এবং ২৫ বছর পর পর করার পক্ষেই রায় দিয়েছিলেন। রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিবকে বিষয়টি ১২ সপ্তাহের মধ্যে বিবেচনা করে যুক্তিযুক্ত নোটিশ জারি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যাতে এই সমস্ত শিক্ষকরা উপকৃত হবেন বলে জানানো হয়েছিল। তবে এখনো পর্যন্ত সেই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ করা হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
সরকারি স্কুলগুলির শিক্ষকদের মতো পোষিত স্কুল এবং মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্টের সুবিধার জন্য পাওয়ার জন্য শিক্ষক সংগঠনের তরফে মামলা করা হয়। সেখানে যেভাবে সরকারি কর্মচারীদের একাংশের চাকরিতে প্রমোশনের সুযোগ থাকে না, সেখানে ৮ বছর, ১৬ বছর এবং ২৫ বছর চাকরি করার পরে একটা অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট (Grade Pay Extra Increment) দেওয়া হয়। অন্য স্কেলে তাদের বেতন পরিকাঠামো নির্ধারিত হয়। সেটাকেই Career Advancement Scheme বা CAS বলা হয়।
এই ক্যাসের সুবিধার জন্য সরকারি স্কুলের পিজি টিচারদের ৮ বছর পরে Grade Pay ৫৪০০ হয়, ১৬ বছর পরে 6600 হয় এবং ২৫ বছর পরে ৭ হাজার ৬০০ হয়। কিন্তু সাহায্য প্রাপ্ত এবং পোষিত স্কুলগুলির পিজি টিচারদের Grade Pay ৪৮০০ই থাকে। গ্রাজুয়েট টিচারদের ১৮ বছর পর গ্রেড পরিবর্তন হলেও পিজি টিচারদের হয় না। আর সেই সুবিধা না থাকার ফলে সরকারি স্কুলের পিজি টিচারের সঙ্গে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের কর্মরত PG টিচারের প্রতি মাসে বেতনের পার্থক্য প্রতি দুইজন শিক্ষকের ক্ষেত্রে ১৫ হাজার টাকা হতে পারে।
আরও পড়ুন, এবার হাসি ফুটতে চলেছে সরকারি কর্মচারীদের মুখে, পেনশন নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত রিজার্ভ ব্যাংকের।
পিজি টিচাররা চাকরি জীবনে ১০ বছর এবং ২০ বছরে একটি অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট পেয়ে থাকেন। এই মামলায় শিক্ষা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর বি শরাফ 12 সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি বিবেচনা করে নোটিশ জারি করার নির্দেশ দেন। ঐ শিক্ষক সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, সাহায্য প্রাপ্ত স্কুল এবং মাদ্রাসার শিক্ষকদের CAS প্রদান করলে শিক্ষকদের বঞ্চনার অবসান হবে। সরকার যত দ্রুত সম্ভব সেই নির্দেশিকা জারি করুক। তাদের বক্তব্য, আদালতের রায় অনুযায়ী শিক্ষা দপ্তর মামলাকারীদের জন্য এই ব্যবস্থা গ্রহণ করে বৈষম্য দূর করুক।
আরও পড়ুন, এবার হাসি ফুটতে চলেছে সরকারি কর্মচারীদের মুখে, পেনশন নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত রিজার্ভ ব্যাংকের।
যেহেতু সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের মত সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষকরা Grade Pay এর ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন পান না। ফলে একই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও দুই স্কুলের কর্মরত পিজি এবং অনার্স টিচারদের মধ্যে প্রতি মাসে বেতনের ফারাক ১৫ হাজার টাকা হতে পারে। সেই মামলাতেই কলকাতা হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়।