এই মুহুর্তে শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি সম্ভব নয়, সাফ জানিয়ে দিলো রাজ্য সরকার।
রাজ্যের অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ আন্দোলনের (DA Agitation) পাশাপাশি স্কুল শিক্ষকরাও তাদের বেতন বৃদ্ধি (Salary Hike) নিয়ে চরম বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন। কয়েকবার কোর্টের দুয়ার পর্যন্তও গিয়েছিলেন তারা। কয়েকদিন আগে অবধিও চলেছে এই আন্দোলন। যদিও অবশেষে রাজ্য সরকার তাদের দাবি মেনে নিয়ে এইসকল শিক্ষকদের জন্য একটি নতুন পদ্ধতি চালু করে বেতন বৃদ্ধি এবং পদোন্নতি ঘটানোর।
Salary Hike not possible for West Bengal Teacher
স্কুলে শিক্ষকদের পড়ানো ও অন্যান্য দক্ষতা অনুযায়ী হবে তাদের বেতন বৃদ্ধি, এই ঘোষণা করা হয় তখন। ফলে বেশ খুশির মেজাজে ছিলেন তারা। কিন্তু এবার পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার, “এই মুহূর্তে কোনভাবেই বেতন বৃদ্ধি সম্ভব নয়।” আর এমন ঘোষণা শুনে হতাশার অন্ধকারে ডুবলেন রাজ্যের বহু শিক্ষক। কিন্তু কোন শিক্ষকদের নিয়ে বলা হল এ কথা? আর এরপর কি হতেই বা চলেছে তাদের? দেখে নিন ব্যাপারে কি বলল রাজ্য সরকার।
বেতনবৃদ্ধি নিয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্ত
এক্ষেত্রে প্রধানত রাজ্যের কতকগুলি বেসরকারি B.Ed কলেজের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেই কলেজগুলির কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা ইউজিসি রাজ্যের সমস্ত B.Ed কলেজগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল তাদের শিক্ষকদের ৫৩ হাজার টাকা করে বেতন প্রদান করতে। কিন্তু সেই বিএড কলেজ গুলি জানাচ্ছে, যদি শিক্ষকদের এই টাকা বেতন প্রদান করতে হয় তাহলে প্রতি ছাত্র-ছাত্রী পিছু দেড় লক্ষ টাকা করে কোর্স ফি চালু করতে হবে কলেজে।
কিন্তু সেটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। কারণ অনেক দরিদ্র অসহায় ছেলেমেয়েরাই সেখানে পড়াশোনা করতে আসে। কলেজ কর্তৃপক্ষ হিসাব নিকাশ করে দেখেছে, কোর্স ফি কোনোভাবেই ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকার উপরে ওঠে না। তাই এমতাবস্থায় শিক্ষকদের ৫৩ হাজার টাকা বেতন প্রদান কোনভাবেই সম্ভব নয়। আর যদি তা করাও হয় তাহলে কলেজের ফান্ড থেকে উল্টে বেশি অর্থ বেরিয়ে যাবে। যদিও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা আছে বলে তারা সেই বেতন দিতে পারছে। কিন্তু অন্যান্যরা জানিয়ে দিয়েছেন তা কোনোভাবেই সম্ভব না।
আরও পড়ুন, পোস্ট অফিস গ্রাহকদের দারুন সুখবর। এই স্কিমে একবার টাকা রেখে জীবনভর আনন্দে কাটান।
এদিকে ইউজিসি তার এই নিয়ম না মানায় রাজ্যের বহু বেসরকারি বিএড কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছে বর্তমানে। ইউজিসি জানিয়েছে, পরিকাঠামোগত ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকার কারণে সেই সমস্ত কলেজের ভর্তির অনুমোদন তুলে নেওয়া হচ্ছে। ফলে এখন আর কোন প্রার্থী সেখানে অ্যাডমিশন নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন, বাজাজ ফিনান্স এর কার্ড আছে? রিজার্ভ ব্যাংকের কড়া শাস্তি। গ্রাহকদের সতর্কবার্তা।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা গেছে রাজ্যে বর্তমানে মোট বেসরকারি বিএড কলেজের সংখ্যা মোট ৬০১ টি। যার মধ্যে ২৫৩টি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল করেছে ইউজিসি। বাবাসাহেব আম্বেদকর ইউনিভার্সিটিকে ইতিমধ্যেই বিএড কলেজগুলির ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। পরবর্তীকালে এ বিষয়ে ঠিক কোন পদক্ষেপ গ্রহণ তা নিয়ে একটি বৈঠক সেরেছেন গতকাল শান্তিনিকেতনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কর্তারা।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গে সমস্ত শিক্ষকদের পদোন্নতি নিয়ে রাজ্য সরকারের বড় ঘোষণা! পূরণ হলো বহুদিনের দাবী।
ইউজিসির এই সিদ্ধান্তের পক্ষ নিয়ে রাজ্যের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে , “শিক্ষকদের স্বার্থও দেখা প্রয়োজন। অনুমোদিত হারে বেতন না দিলে ভালো মানের শিক্ষক পাওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মানের সঙ্গে আপোষ করা হবে।” আবার তার বিরোধিতা করে রাজ্যের শিক্ষানুরাগে ঐক্যমঞ্চের কর্ণধার কিংকর অধিকারী বলেছেন,”253 টি B.Ed কলেজের অনুমোদন বাতিল করা হলো। কিন্তু এতদিন যে পরিকাঠামোহ হীন ভাবে সমস্ত কিছু চললো তার দায় এখন কে নেবে? সমস্ত ক্ষেত্রেই নজরদারির যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এর তদন্ত হওয়া দরকার।”
Written by Nabadip Saha.