অবশেষে ইলেকট্রিক বিল কমাতে বিরাট সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের, পুজোর আগে বিরাট সুখবর।

ইলেকট্রিক বিল এর যন্ত্রণা থেকে এবারে রাজ্যবাসী অনেকাংশে পেতে চলেছে মুক্তি।

দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির বাজারে বিদ্যুৎ মিটার পিছু প্রতি তিন মাস অন্তর ইলেকট্রিক বিল হিসেবে প্রায় সব পরিবারকেই গুণতে হয় অতিরিক্ত টাকা। এবারে সেই চিন্তা দূর হতে চলেছে রাজ্যবাসীর। স্বাভাবিক ভাবেই প্রতি তিন মাস অন্তর ইলেকট্রিক বিল আসায় বিল দেখেই হঠাৎ করেই বাঙালীর চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবার জোগাড় যেন অনেকের কাছেই এখন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। আসুন জেনে নি যে, রাজ্যে এই ইলেকট্রিক বিল সংক্রান্ত কী কী পরিবর্তন আসতে চলেছে।

বিদ্যুৎ বিল এর নতুন নিয়ম হিসেবে সুবিধাঃ- বিদ্যুৎ দপ্তরের বিল এখন অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া যায়। আগের মতো আর ইলেকট্রিক অফিসে ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে গিয়ে অপেক্ষা করতে হয় না লম্বা লাইনে। এছাড়া বিদ্যুৎ দপ্তরের ওয়েবসাইটে নিজের মোবাইল নম্বর আর কঞ্জিউমার নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে লগইন করলে মিটার সংক্রান্ত যাবতীয় সব তথ্যই পাওয়া যায়।

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুৎ শুল্ক হারঃ- WBSEDCL- এর ছয়টি ট্যারিফ স্ল্যাব রয়েছে। যেমন, ১-১০২ ইউনিট ব্যবহারের জন্য, গ্রাহককে প্রতি ইউনিট ₹ ৫.৩৭ দিতে হবে, ১০৩-১৮০ ইউনিটের জন্য, প্রতি ইউনিট চার্জ হবে ₹ ৫.৯৭/-, ১৮১-৩০০ ইউনিটের জন্য প্রতি ইউনিট চার্জ হবে ₹ ৬.৯৭/-, ৩০১-৬০০ ইউনিটের জন্য, ইউনিট প্রতি খরচ হবে ₹ ৭.৩১/-, ৬০১-৯০০ ইউনিটের জন্য, প্রতি ইউনিট খরচ হবে ₹ ৭.৫৮/- এবং ৯০১ ইউনিটের জন্য চার্জ হবে ₹ প্রতি ইউনিট ৮.৯৯।

দেখা যায় প্রতি মাসের ইলেকট্রিক বিল, পেমেন্ট রিসিপ্ট ইত্যাদি সব কিছুই। যেকোনো দরকারে সেখান থেকে ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে পুরানো বা নতুন বিদ্যুৎ বিল। ইলেকট্রিক বিল ৩ মাস অন্তর হিসেব করা হলে প্রতি ইউনিটের খরচ স্ল্যাব হিসেবে অনেকটাই বেড়ে যায়। ফলে মাসিক হিসেবে বিল হলে খরচ অনেকটাই কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গোটা বিদ্যুৎ তথা বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত বিষয় দেখে রাজ্যের দুটি সংস্থা। এরা হলেন WBSEDCL(West Bengal State Electricity Distribution Company Limited) এবং CESC(Calcutta Electric Supply Corporation Ltd.). বিশেষ সুত্রে খবর পাওয়া গেছে, এই দুটি সংস্থার মধ্যে WBSEDCL সংস্থাটি এই নতুন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। এতে সাধারণ মানুষ বেশ উপকৃত হতে চলেছেন। তারা কি সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন?

বিদ্যুৎ বিল সিস্টেমের পোস্টপেইড পদ্ধতিঃ- এতদিন রাজ্যে ইলেকট্রিক বিল নির্ধারণের পদ্ধতি জেনে নেই সংক্ষেপে। আমাদের পশ্চিমবঙ্গে যে পদ্ধতিতে ইলেকট্রিক বিল নির্ধারিত হয় তা হল পোস্টপেইড সিস্টেম। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে ২টি বিষয় আছে, বিদ্যুৎ বিল  পিরিয়ড এবং কনজাম্পশন পিরিয়ড। বিদ্যুৎ ব্যবহারের সময়কাল হল ৩ মাসের স্ল্যাব, যে সময়ে বিদ্যুৎ খরচ হয়।

ধরুণ, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ মাসে বিদ্যুৎ খরচ হল। উপরোক্ত খরচের সময়ের জন্য, বিদ্যুৎ বিল  এপ্রিল মাসে তৈরি হবে এবং এই ইলেকট্রিক বিল এর সময়কালকে এপ্রিল, মে, জুন হিসাবে দেখাবে। ৩ মাসের আরেকটি স্ল্যাব, যেই সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করা প্রয়োজন। সুতরাং, এটি পোস্টপেইড পদ্ধতি এবং বিদ্যুৎ বিল সংগ্রহের কাজ ৩ মাস আগে করা হয় না।

দারুণ সুখবর, বিদ্যুৎ বিল জমা দিলে পাওয়া যাবে বিশেষ ছাড়, NEW UPDATE 2022

বিদ্যুৎ বিল সিস্টেমের প্রিপেইড পদ্ধতিঃ- ভারতবর্ষের অনেক রাজ্যেই মোবাইল রিচার্জের মতো প্রিপেইড মিটার চালু করার কাজ চলছে যেখানে গ্রাহকদের বিদ্যুতের উপভোগ অবিচ্ছিন্ন রাখতে গেলে টপআপ ব্যবহার করে রিচার্জ করতে হবে। এতে অনেক গ্রাহকের মন্তব্য যে তাদের বাড়তি চাপ নিতে হয় না। কারণ তারা ইলেকট্রিক বিল আগে থেকে পেমেন্ট করে ব্যবহার করাতেই বেশি স্বাছন্দ্য বোধ করেন।

পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে নতুন আপডেটঃ- এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মহাশয় জানিয়েছেন, প্রথমে কোলকাতার তিনটি ওয়ার্ড যথাক্রমে ১১১ নম্বর, ১১২ নম্বর এবং ১১৪ নম্বর ওয়ার্ড তিনটি পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ পর্ষদের আওতায় রয়েছে। এই মুহূর্তে কোলকাতার এই ৩ টি ওয়ার্ডে মাসিক বিদ্যুৎ বিল সিস্টেম চালু করা হবে। আপাতত এই পদ্ধতির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হচ্ছে। পদ্ধতির সফলতার ওপরের নির্ভর করে পরবর্তীকালে সারা পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ বিল সিস্টেম ৩ মাসের বদলে প্রতি মাসে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

চাপে পড়ে বিদ্যুৎ বিলের দাম কমালো রাজ্য সরকার, কত কমলো দেখুন, New Update 2022.

CESC (Calcutta Electric Supply Corporation Ltd.) এর বিদ্যুৎ বিল এর সিস্টেমঃ- অনেকের মনেই হয়তো প্রশ্ন যে, WBSEDCL এর ক্ষেত্রে এই মাসিক বিদ্যুৎ বিল সিস্টেম চালু হবে ঠিকাছে। কিন্তু CESC এর ক্ষেত্রে কি ৩ মাসের ইলেকট্রিক বিল সিস্টেম চালু থাকবে? প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের CESC (Calcutta Electric Supply Corporation Ltd.) আগে থেকেই এই মাসিক বিদ্যুৎ বিল সিস্টেমেই বিল নিয়ে থাকে।

সুতরাং তারা তাদের বর্তমান পদ্ধতিতেই বিল চালু রাখবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই বিদ্যুৎ বিল এর ক্ষেত্রে কিছুটা সাশ্রয় হলে বেশ উপকৃত হবেন রাজ্যবাসী। আর যদি পরবর্তীকালে ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্যের মতো প্রিপেইড মিটারের প্রচলন হয় এই রাজ্যে, তাহলে আরও উপকৃত হবেন রাজ্যবাসী। এমন আরও খবরের সন্ধান পেতে খোঁজ পেতে চোখ রাখুন সুখবর বাংলা এর ওয়েবসাইটে। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button