একাধিক ব্যাংকে একাউন্ট থাকলে RBI এর এই নিয়ম মানুন, নইলে সব টাকা জলে যাবে।
সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক ভরসার জায়গা হল RBI এর অধীনস্থ যে কোন ব্যাঙ্ক। ডিজিটাল ভারতবর্ষের এই আধুনিক যুগে যাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট একটির বেশি, তারাও এখন সমস্যায় পড়েছেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) এবং ইউপিআই (UPI) তথা Unified Payment Interface এর সংযোগ করা যতটা সহজ, ব্যাঙ্কের শর্তগুলি পূরণ করা ততটাই কঠিন। আসুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে RBI সর্বেসর্বা। সাধারণের ভরসাকে দৃঢ় করে।
UPI সিস্টেম এর কি সুবিধা অসুবিধা?
ইউনিফাইড পেমেন্টস ইন্টারফেস (UPI) হল এমন একটি সিস্টেম যা একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টকে একটি ইউনিক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অপারেট করার ক্ষমতা দেয়। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাঙ্কিং সুবিধাগুলিকে একত্রিত করে এবং বাধাহীনভাবে ব্যাঙ্ক একাউন্ট পরিচালনা তথা লেনদেন করার সুবিধা প্রদান করে। যেকোন অংশগ্রহণকারী ব্যাঙ্কের প্রাধান্য এখানে থাকে।
RBI স্বীকৃত হলেও বর্তমানে কোন বিষয়ে বিশেষ সমস্যা?
এই সময়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পরিচালনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বেশি বেশি লেনদেন। বর্তমানে অনলাইন ব্যাঙ্কিং অ্যাপের মাধ্যমে UPI মাধ্যম ব্যবহার করার ফলে গ্যাস বুকিং, মোবাইল রিচার্জ, ছোট বড় লেনদেন সহ অন্যান্য অতিরিক্ত লেনদেনের কারণে বাড়ছে Money Transaction এর সংখ্যা। কিন্তু কেউই অনুমান করতে পারছেন না, যে এটি কতটা ক্ষতি করতে পারে!
একাধিক ব্যাঙ্ক একাউন্টের কি কি অসুবিধা?
একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলে ব্যাঙ্কিং মেইন্টিনেন্স চার্জ নিয়ে অনেক রকম সমস্যা হয়। যদিও বিষয়টি RBI স্বীকৃত। ব্যাঙ্কের নানাবিধ স্কিম অথবা ঋণ গ্রহণের সুবিধার সুবাদে গ্রাহককে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। ব্যাংকগুলিতে RBI গাইডলাইন মেনে গ্রাহককে বেশ কয়েকটি পৃষ্ঠাতেই স্বাক্ষর দিতে হয়।
গ্রাহকেরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জানেন না বা খেয়াল করেন না যে, কেন এতগুলি পৃষ্ঠা স্বাক্ষর করানো হয়েছে এবং সেগুলিতে কী লেখা আছে। RBI গাইডলাইন অনুসারে তৈরি ব্যাঙ্কের শর্তাবলী পড়ে খুব কম ব্যাক্তিই একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলেন। আসুন জেনে নেই 1টির বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকার সুবিধা বা অসুবিধাগুলি কি ধরণের হতে পারে।
প্রথমত, আপনি যদি কোন লোন (Loan), পিএফ (PF) বা মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Fund) নেওয়ার কথা ভেবে থাকেন অথবা ফিক্সড ডিপোজিটের (FD) জন্য বিভিন্ন ব্যাঙ্কে RBI এর গাইডলাইন মেনেই অ্যাকাউন্ট খুলতে চান, তাহলে জেনে নিন কিভাবে আপনি সমস্ত বিষয়গুলি খেয়াল রাখবেন?
ব্যাঙ্কের তরফ থেকে বিভিন্ন অফারের সুবিধাঃ-
ব্যাঙ্কগুলিকে তাদের গ্রাহক বাড়ানোর উদ্দেশ্যে RBI এর নিয়ম মেনেই আমানতের ওপরে সুদের হার, ডেবিট কার্ড, বিভিন্ন রকমের বীমা, ব্যাঙ্ক লকার সুবিধা, লোন এবং আরও অনেক রকমের অফার দিয়ে থাকে গ্রাহকদের। এগুলির সুবিধা নিতে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে এই সুবিধা নিতে পারবেন। একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকলে ট্রেন বা ফ্লাইটের টিকিট বুক করাও বেশ সহজ হয়।
বীমা কভারেজ এর কি সুবিধা?
RBI – এর নির্দেশিকা অনুযায়ী, ব্যাঙ্কে টাকা জমা দিলে অর্থাৎ একাউন্ট থাকলেই পাওয়া যেতে পারে 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমা। অর্থাৎ, ব্যাঙ্ক যদি দেউলিয়া হয়ে যায় তাহলে আপনি 5,00,000 টাকা পর্যন্ত ফেরত পাবেন। এমনকি আপনার অ্যাকাউন্টে বেশি টাকা থাকলেও, তাই আপনি বীমা করে আপনার অর্থকে সুরক্ষিত করতে পারবেন।
ব্যাঙ্কের ডেবিট কার্ড সংক্রান্ত বিষয়ঃ-
একাধিক ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার আরও একটি সুবিধা হল, আলাদা আলাদা ব্যাঙ্কগুলির ডেবিট কার্ড পাওয়া যায়। এই ATM Card ব্যবহার করে যেকোনো সময় প্রয়োজন মত ব্যাঙ্কের এটিএম (ATM) থেকে টাকা তোলা যায়। তবে লেনদেন করলে একটা চার্জ দিতেই হয়। এক্ষেত্রে RBI এর নিয়মে এই চার্জের থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই।
একাধিক অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে শুধু সুবিধাই নয়, অসুবিধাও রয়েছে। তাই অবশ্যই ভেবে চিন্তে একাধিক একাউন্ট খুলুন। প্রতারণা সংক্রান্ত বিষয়ঃ- সঠিকভাবে একাধিক অ্যাকাউন্ট মেইনটেইন করতে না পারলে হতে পারে নানা রকমের সমস্যা। অনেকে ব্যাঙ্ক একাউন্ট থাকলে অনেক সময় ব্যাঙ্ক একাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের প্যান কার্ড বা কোনও আইডি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতারণার স্বীকার হয়ে থাকেন অনেকেই।
ITR পূরণ করতে সমস্যাঃ-
যদি কোনও ব্যক্তি তার অ্যাকাউন্টে বেশি পরিমাণে টাকা রাখেন, তাহলে তাকে তার আইটিআর (ITR) পূরণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে সমস্ত রকম তথ্য দিতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের বিবরণ মনে রাখা কঠিন। সমস্ত অ্যাকাউন্ট আপডেট করাও বেশ সমস্যার একটি বিষয়। এমন পরিস্থিতিতে আইটি রিটার্নের বিবরণে অনেক সময় ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকে।
বার্ষিক এক্সট্রা চার্জ কেমন লাগে?
RBI এর নিয়মে অ্যাকাউন্ট খোলার সময় অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স বজায় রাখতে হয় প্রত্যেককেই। এক্ষেত্রে, এসএমএস চার্জ (SMS Charge), এটিএম চার্জ (ATM Charge), চেক বইয়ের ফি (Cheque Book Fee) এর মতো এরকম অনেক ধরণের চার্জ দিতে হয়। যদি একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকে, তবে সেক্ষেত্রে বার্ষিক ব্যয় বেড়ে যাবে অনেকটাই।
বদলে গেল পোষ্ট অফিসে টাকা তোলার নিয়ম, এবার চাপ পড়বে মধ্যবিত্তের পকেটে।
পাসওয়ার্ড সংক্রান্ত সমস্যাঃ-
RBI নিয়মে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে ডেবিট কার্ডের পাসওয়ার্ড মনে রাখাও বেশ কঠিন। অনেকেই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ভুলে যান। আবার সেই কারণে অনেকেই ATM Card এর PIN নম্বর লিখে রাখেন কার্ডের সাথেই। আর সেই কার্ড হারিয়ে গেলেই বেশ সমস্যায় পড়তে হয় গ্রাহককে। হয়েও যায় অর্থহানি।
তাই RBI এর নিয়ম থাকা সত্ত্বেও নিজের প্রয়োজন এর বেশি ব্যাঙ্ক একাউন্ট না থাকাই সমীচীন। আর যদি করআও থাকে একাধিক একাউন্ট, সতর্ক হয়ে ব্যবহার করলেই বাড়তি চিন্তামুক্ত থাকা সম্ভব। সরকারি, বেসরকারি চাকরি, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক সংক্রান্ত বিষয়, বিভিন্ন রকমের স্কলারশিপ, সরকারি প্রকল্প সংক্রান্ত বিবিধ খবর জানতে নজর রাখতে পারেন আমাদের ওয়েবসাইটে। আপনার মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.
একটা ব্যাঙ্কের একাউন্টে যাবতীয় টাকা রাখার পর যদি সেই ব্যাঙ্ক উঠে যায় তখন ওই টাকা কে ফেরত দেবে? এখন ত মাত্র পাঁচ লাখ টাকা পাওয়া যাবে।