Passport – পাসপোর্ট করতে কত খরচ লাগবে? কি কি ডকুমেন্ট লাগবে? আবেদনই বা কীভাবে করবেন? বিস্তারিত জেনে নিন
প্রত্যেক দেশের মানুষদের জন্যই নিয়ম রয়েছে কিছু নথি থাকা আবশ্যিক। তার মধ্যে একটি নথি হলো Passport বা পাসপোর্ট। যদি আমাদের দেশের কথা বলি তাহলে কোন ব্যক্তির ভারতের বাইরে অন্য কোন দেশে যেতে হলেই পাসপোর্টের দরকার পড়ে। তাই যদি পাসপোর্ট সংক্রান্ত কোনো তথ্য সমন্ধে জ্ঞান না থাকে তাহলে পাসপোর্ট বানানো অনেকটাই ঝক্কির ব্যাপার মনে হতে পারে। নতুন করে কেউ যদি পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করে তাহলে তাকে দুটি ধাপে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন করতে হয়।
How Much will it Cost to Apply for a Passport?
প্রথমে নিকটবর্তী Passport বা পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর সময় অল্প কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন পড়ে। অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়। এই পুলিশ ভেরিফিকেশনে বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টস এর জেরক্স এবং আসল চাওয়া হয়ে থাকে।
অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর সময় এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন এর সময় কি কি ডকুমেন্টস চাওয়া হয়ে থাকে? তাই আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা Passport বা পাসপোর্ট এর জন্য কি কি ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়, কিভাবে আবেদন করতে হবে, আবেদন করার জন্য কত টাকা লাগবে ইত্যাদি বিষয়গুলি বিস্তারিত জানবো।
পাসপোর্ট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় নথি
- মাধ্যমিক পাস হলে মাধ্যমিক পাস সার্টিফিকেট
- অষ্টম শ্রেণী পাস হলে অষ্টম শ্রেনি পাশ সার্টিফিকেট অথবা স্কুল সার্টিফিকেট
- যদি কেউ পড়াশোনা না করে তাহলে তার ক্ষেত্রে কোন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নেই।
- আধার কার্ড
- ভোটার কার্ড
- প্যান কার্ড
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- ড্রাইভিং লাইসেন্স
এই সমস্ত ডকুমেন্টসগুলির জেরক্স কপি এবং অরিজিনাল কপি নিয়ে যেতে হবে।
পাসপোর্টের জন্য রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া
www.passportindia.gov.in এই ওয়েবসাইটটি ওপেন করলে “New User Registration” লেখা দেখা যাবে। এখানে ক্লিক করে আবেদনকারীকে তার রাজ্যের মেন Passport বা পাসপোর্ট অফিস নির্বাচন করতে হবে (পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে কলকাতা)। এরপর নাম, জন্ম তারিখ, ইমেইল আইডি, লগইন আইডি, পাসওয়ার্ড, hint question পূরণ করে এবং ক্যাপচা ফিলাপ করে রেজিস্টার ক্লিক করতে হবে।
পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন
- রেজিস্ট্রেশন করা হয়ে গেলে আপনার মেইল আইডিতে একটি অ্যাক্টিভেশন মেল যাবে। সেই মেলে একটি লিংক দেওয়া হবে ওই লিংকে ক্লিক করে আইডি একটিভ করে নিতে হবে।
- আইডি একটিভ হয়ে গেলে আবেদনকারীকে লগ ইন করতে হবে। লগইন করার পর একটি অনলাইন ফর্ম খুলবে যেটি সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে।
- অনলাইন ফর্মটি ফিলাপ করা হয়ে গেলে ৩৬ টি পেজের Passport বা পাসপোর্ট এর জন্য ১৫০০ টাকা অনলাইনের মাধ্যমে জমা করতে হবে। টাকা জমা হয়ে গেলে নিকটবর্তী যে পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে আপনি অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে চান সেটি নির্বাচন করে নেবেন।
পাসপোর্ট পেতে আপনার কাছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি থাকতে হবে। যেমন ঠিকানা প্রমাণ, জন্ম সার্টিফিকেট, আইডি প্রুফ এবং আপনার প্রুফ ইত্যাদি। আর এই প্রমাণপত্র গুলো দেওয়ার জন্য আপনাকে কোন কোন নথি ব্যবহার করতে দেখে নিন।
১) ঠিকানা প্রমাণ হিসাবে
ভোটার আইডি কার্ড, বিদ্যুৎ বিল, ভাড়া চুক্তি, টেলিফোন বিল, জল বিল, গ্যাস সংযোগ বিল বা আপনার অ্যাকাউন্টের পাসবুক (এর মধ্যে যেকোনো একটি) দিতে পারেন।
২) আইডি প্রমাণ হিসাবে
আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো নথিগুলির মধ্যে একটি দিতে হবে আপনাকে।
৩) আর আবেদন করার সময় সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে পাসপোর্ট সাইজের ছবি সঙ্গে নিয়ে আসতে ভুলবেন না।
৪) সেইসাথে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট যেমন- মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ সার্টিফিকেট।
আবারও প্রায় 100 টাকা কমলো রান্নার গ্যাসের দাম! এইভাবে বুকিং করলে আপনিও পাবেন এই বিশেষ ছাড়
পাসপোর্ট হাতে পেতে কত সময় লাগে?
পাসপোর্ট তৈরির আবেদনের পর সাধারণত, একটি Passport বা পাসপোর্ট হাতে পেতে 30 থেকে 45 দিন সময় লাগে। কিন্তু আপনি যদি তৎকাল পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন, তাহলে 7 থেকে 14 দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন।
পাসপোর্টের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর দিন কি নিয়ম রয়েছে
পাসপোর্ট এর জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর দিন এই সমস্ত ডকুমেন্ট গুলি দেখা হয় এবং সেই সাথে আবেদনকারীর একটি ছবি তোলা হয় যেটি পরে পাসপোর্টে প্রিন্ট করা হয়। তাছাড়া পাঁচটি আঙুলের ছাপ নেওয়া হয় এবং একটি ফর্মে সই করানো হয়।
পাসপোর্টের পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য দরকারি ডকুমেন্ট
পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে Appointment প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যে সমস্ত ডকুমেন্ট গুলি চাওয়া হয় সেগুলি হচ্ছে-
- মাধ্যমিক পাস মার্কশীট
- মাধ্যমিক পাস সার্টিফিকেট
- মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড
- জন্ম সার্টিফিকেট (যাদের জন্ম 26 জানুয়ারি 1989 সালের আগে হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে জন্ম সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নেই)।
- বাবার আধার কার্ড
- বাবার ভোটার কা
- প্যান কার্ড
- নিজের বা বাবার নামের জায়গার দলিল
- বাসিন্দা সার্টিফিকেট (পঞ্চায়েত অফিস অথবা পৌরসভা অফিস থেকে নিতে হবে)।
- যারা একদমই পড়াশুনা করেনি তাদের ক্ষেত্রে Magistrate Affidavit জমা দিতে হবে।
পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে বাইপোস্টের মাধ্যমে বাড়িতে Passport বা পাসপোর্ট পৌঁছে দেওয়া হয়। এক কথায় পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করার পর সমগ্র প্রক্রিয়া ঠিকঠাকভাবে হলে মোটামুটি ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট বাড়িতে চলে আসে।
ভারতের পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?
- ৩৬ টি পেজের পাসপোর্টের জন্য ১৫০০ টাকা।
- ৬০ টি পেজের পাসপোর্টের জন্য ২০০০ টাকা।
- ৩৬ টি পেজের পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে, নষ্ট হয়ে গেলে অথবা চুরি হয়ে গেলে তার জন্য পুনরায় অ্যাপ্লিকেশন করলে ৩০০০ টাকা জমা দিতে হয়।
- ৬০ টি পেজের পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে, নষ্ট হয়ে গেলে অথবা চুরি হয়ে গেলে তার জন্য পুনরায় অ্যাপ্লিকেশন করলে ৩৫০০ টাকা জমা দিতে হয়।
আজকের প্রতিবেদন পড়ে আশাকরি Passport বা পাসপোর্ট সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। আপনিও যদি পাসপোর্ট করতে চান উপরের পদ্ধতি ও নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট খুব সহজেই বানিয়ে ফেলতে পারবেন।