Durga Puja Holidays – দূর্গা পূজার ছুটি কমিয়ে স্কুল খোলা রাখতে হবে। বাড়তি গরমের ছুটির কারনে সিলেবাস অসম্পূর্ণ।

সামনেই আসতে চলেছে দুর্গোৎসব (Durga Puja Holidays). পুজোর আমেজে আনন্দে মেতে উঠতে চলেছে সকল রাজ্যবাসী। আমরা সারা বছর যে যা কাজই করি না কেন, বছরে পুজোর দিনগুলিতে একটানা ছুটি কাটানোর জন্য অপেক্ষা করে থাকি সকলেই। স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা থেকে শুরু করে সরকারি কর্মজীবীরা পর্যন্ত ছুটির জন্য মুখিয়ে থাকেন এই সময়।

Durga Puja Holidays 2023

কিন্তু শিক্ষকদের দাবী অনুযায়ী রাজ্য সরকার যদি ঘোষণা করেই ফেলে, তবে এ বছর স্কুল পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের পূজোর এই আনন্দ মাটি করে দিতে চলেছে। রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে জানা যাচ্ছে এ বছর দুর্গাপুজোর সময় রাজ্যের সমস্ত স্কুল গুলি নাকি একটানা ছুটি থাকতে নাও পারে। রাজ্যের বেশ কতকগুলি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা Durga Puja Holidays নিয়ে এই প্রস্তাব রেখেছেন। বিষয়টি নিয়ে অনুমোদন চেয়ে পাঠানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পরিষদের কাছে।

ছুটি কমার কারন

মধ্যশিক্ষা পর্ষদ যদি অনুমতি দেয় তাহলে পুজোর মাঝেই খোলা থাকবে স্কুল গুলি এবং ক্লাস করতে হবে সকল ছাত্র ছাত্রীদের।
এই কারন হিসাবে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কয়েক মাস আগেই গরমের ছুটির (Summer Vacation) কারণে টানা দেড় মাস পর্যন্ত ছুটি ছিল রাজ্যের বিদ্যালয় গুলি। তার সঙ্গে বিগত মাস গুলিতে বিভিন্ন উৎসবের ছুটির কারণেও মাসের বেশ অনেকগুলি দিন বন্ধ ছিল স্কুলগুলি।

আবার এর মধ্যেই আসতে চলেছে দুর্গোৎসব সহ লক্ষ্মী পূজা, কালীপূজা ইত্যাদি। আর এ বছর পূজো দেরি করে পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই স্কুল খোলার দিনও অনেকটাই পিছিয়ে গেছে। অন্যদিকে আবার বছরের শেষেই ছাত্র-ছাত্রীদের ফাইনাল পরীক্ষা। এছাড়াও চলতি শিক্ষা বর্ষের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষাও রয়েছে এর মাঝে।

তাই বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে ছাত্রছাত্রীদের সিলেবাস হয়তো এ বছর শেষ করা সম্ভব হবে না। বিগত ছুটি গুলির (Durga Puja Holidays) কারণে এমনিতেই অনেকগুলি দিন রাজ্যের স্কুল বন্ধ থাকায় সিলেবাস এগিয়ে নিয়ে যেতে বিলম্ব হয়েছে। তাই এর মাঝে আবার যদি পুজোর জন্য একটা না ছুটি দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের তাহলে পরীক্ষার আগে তাদের পাঠক্রম শেষ করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না।

Festival Bonus Salary Hike (পুজোর বোনাস, বেতনবৃদ্ধি)

আর এই আশংকা থেকেই তারা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে প্রস্তাব রেখেছেন পুজোর মাঝে যদি অন্তত দিন সাতেকের জন্য স্কুলগুলি খোলা রাখা যায় (Durga Puja Holidays) তবে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনায় অনেক সুবিধা হবে।
হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত জানান, “পুজোর ছুটির পরে স্কুল খুলছে ১৬ নভেম্বর নাগাদ। তার পরে বেশির ভাগ স্কুলেই ১৭ নভেম্বর থেকে তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন শুরু হওয়ার কথা। কারণ, সে ভাবেই পরীক্ষা নিতে নির্দেশ দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

পাশাপাশি, নভেম্বরেই হবে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট। ফলে দীর্ঘ পুজোর ছুটি কাটানোর পরে স্কুল খুলতে না খুলতেই পরীক্ষা হলে পড়ুয়াদের প্রস্তুতি কতটা থাকবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান শিক্ষকেরা। পাঠ্যক্রম শেষ না হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য আবেদন করছি, লক্ষ্মীপুজো বা কালীপুজোর মধ্যে যে ১৫ দিন সময় রয়েছে, তার মধ্যে যদি অন্তত এক সপ্তাহের জন্য স্কুল খুলে রাখা যায়। কিন্তু স্কুলের দরজা খুলতে গেলে দরকার পর্ষদের নির্দেশিকা।’’

এছাড়াও বাঙুরের নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানান, “বছরে ৬৫ দিন ছুটি পাওয়া যায়। তাঁদের স্কুলের ওই ৬৫ দিনের ছুটি (Durga Puja Holidays) এমন ভাবে ভাগ করা হয়েছে যে, লক্ষ্মীপুজো থেকে কালীপুজোর মধ্যে সাত আট দিন স্কুল খুললেও বছরের মোট ছুটির সংখ্যা বাড়বে না। আমাদের স্কুলে আর্থিক ভাবে দুর্বল পরিবার থেকে বেশ কিছু পড়ুয়া আসে।

আরও পড়ুন, স্টেট ব্যাংকের গ্রাহকদের জন্য সুখবর।

গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়ার সামর্থ্য তাদের নেই। স্কুলের পড়াশোনার উপরেই তারা নির্ভর করে। ফলে পুজোর পরে স্কুল খুলে পরীক্ষা শুরু হলে ওদের পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।’’
যদিও দুর্গাপূজা এবং কালীপূজার মাঝে বিদ্যালয় গুলি খোলা রাখা নিয়ে শিক্ষকরা যে আর্জি জানিয়েছেন পর্ষদের কাছে, তা নিয়ে কোনো চূড়ান্ত অনুমোদন এখনো মেলেনি।

আরও পড়ুন, পুজোর মাসে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার দিচ্ছে সরকার। কিভাবে পাবেন জেনে নিন।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “শিক্ষকরা যে আবেদন করেছেন, তা যথার্থই যুক্তিযুক্ত। এবছর যদি ছাত্রছাত্রীদের পাঠক্রম সম্পূর্ণ না হয়, তাহলে তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে খামতি থেকে যাবে। আর ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষতি করে স্কুল ছুটি (Durga Puja Holidays) রাখার কোনো মানে হয়না। তাই স্কুলগুলি যদি খোলা থাকে, তাতে উপকার পড়ুয়াদেরই হবে।”

এখন দেখা যাক এব্যাপারে (Durga Puja Holidays) মধ্যশিক্ষা (WBBSE) পর্ষদের তরফে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সবকিছু বিবেচনা করে যদি তারা শিক্ষকদের সেই আর্জিতে অনুমোদন দেয়, তবে পুজোর মাঝেই স্কুলে ক্লাস করতে যেতে হবে ছাত্রছাত্রীদের।
Written by Nabadip Saha.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button