সরকারি কর্মীদের ধর্মঘটের পর আবার নতুন সিদ্ধান্ত, লাগাতার চলবে এবারে! বিস্তারিত দেখুন।

রাজ্যের সরকারি কর্মীদের আন্দোলন অবিরাম চলছে, সাথে অনশন। তবে এবারে মহার্ঘভাতা পেতে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ৫০ টি’র বেশি সংগঠন যুক্ত হয়েছে একসাথে। একই সাথে তারা বেশ কিছু দাবী পাবার জন্য নিজেদের পথে আন্দোলনের শক্তি বাড়াতে এবারে নিচ্ছে নতুন সিদ্ধান্ত। এবার থেকে এই নীতিতে কাজ চালাতে মরিয়া রাজ্য সরকারি কর্মীরা। কিভাবে তারা তাদের এই নতুন সিদ্ধান্তকে বাস্তবে আন্দোলনের রূপ দেবেন, তা জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত ভাবে।

রাজ্যে সরকারি কর্মীদের আন্দোলন, অনশন, ধর্মঘটের পর এবারে ডিজিটাল আন্দোলনের সিদ্ধান্ত।

বকেয়া ডিএর দাবিতে শুরু হল ডিজিটাল প্রতিবাদ। রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। এরই মধ্যে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ‘ডিজিটাল অসহযোগিতা’-র সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্মীদের তরফে জানানো হয়েছে আগামী ১৮ মার্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আর ডিজিটাল মাধ্যমে সহযোগিতা করবেন না প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক ও সরকারি কর্মীরা। অফিস টাইমের বাইরে গিয়ে ফোনে সরকারি কাজ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালন করবেন না।

বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএর তফাত এসে দাঁড়িয়েছে ৩২ শতাংশ। বকেয়া ডিএ আদায় করতে প্রতিবাদে সামিল হয় রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। ঘটনাটি কলকাতা হাইকোর্টের দরজা অবধি গড়ায়। হাইকোর্টের রায় অবশ্য কর্মীদের পক্ষেই যায়। গত ২০২২ সালের মে মাসে হাইকোর্ট কর্মচারীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয় তৃণমূল সরকারকে। এরপরে হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি নিয়ে যায় রাজ্য সরকার।

এখানে সরকারি তরফে যুক্তি দেখানো হয়েছিল, হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী ডিএ দিতে হলে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা খরচ হবে। এই খরচ রাজ্য সরকারের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবী বলেন, এত বছরের বকেয়া ডিএ কর্মীদের দিতে হলে রাজ্যের উপর বিশাল অঙ্কের আর্থিক বোঝা চাপবে, এ কথা সঠিক। তবে পাশাপাশি এ-ও সঠিক যে, ডিএ সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য অধিকার।

তাই এই ডিএ থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি বারংবার পিছিয়েছে। আগামী শুনানি হওয়ার কথা ২১ মার্চ তারিখে। এসবের মধ্যেই ডিএর দাবিতে ধর্মতলার শহিদ মিনারের পাদদেশে বসে আন্দোলন করছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। গত শুক্রবার রাজ্য জোড়া ধর্মঘটের ডাক দেয় তারা। এ বার কর্মীরা ডিজিটাল প্রতিবাদের পথ বেছে নিল।

ডিজিটাল প্রতিবাদ ফলপ্রসূ করার জন্য সরকারি কর্মীরা একটি কর্মসূচি তৈরী করে নিয়েছেন। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, ১৮ তারিখ থেকে সরকারি সমস্ত হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ থেকে কর্মীরা বেরিয়ে যাবেন। সরকারি কাজের সময় হল সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৫টে ৩০ মিনিট পর্যন্ত। এই সময়ের আগে এবং পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আর পালন করবেন না রাজ্যের কর্মীরা।

এই ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোসিট করলেই পাবেন আসল লাভের লাভ! সর্বাধিক সুদের হার পেতে এখুনি দেখুন।

ছুটির দিনগুলোতে দফতরের কাজ আর করবেন না। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, অফিসের বাইরে কোনো অনলাইন মিটিং করা হবে না। ব্যক্তিগত ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেট ব্যবহার করে অফিসের কোনও কাজ আর করবেন না। এই ডিজিটাল অসহযোগিতায় সামিল হবেন সংগঠনের সদস্য প্রাথমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তাঁরাও ১৮ তারিখের পর থেকে ব্যক্তিগত মোবাইল, ইন্টারনেট বা কম্পিউটার ব্যবহার করে স্কুলের কাজ করবেন না।

মাত্র 50 টাকা দিয়ে আধার লিংক করুন।

প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের উপর প্রচুর অনলাইন কাজের চাপ থাকে, এ বার থেকে শিক্ষকরা প্রাথমিকের কোনও কাজ ডিজিটালি আর করবেন না। ওই সমস্ত কাজের জন্য আলাদা কর্মী নিয়োগের দাবিও তোলা হয়েছে সংগঠনের তরফে। তবে প্রতিবাদের পাশাপাশি সংগঠনের মানবিক মুখও রয়েছে। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, এই প্রতিবাদী পদক্ষেপের ফলে রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কোনও বিরূপ প্রভাব পড়বে না। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নির্দিষ্ট পরীক্ষকেরা উপস্থিত থাকবেন। পরীক্ষার হলে যাবতীয় দায়িত্বও পালন করবেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকরা।
Written by Parna Banerjee.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button