বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবীতে বাংলা জুড়ে কর্মবিরতি পালন সরকারি কর্মচারীদের।
বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে সোমবার কর্মবিরতি পালন করলেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। সরকারি কর্মীদের আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিচ্ছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এই সংগঠনের উদ্যোগেই আজ রাজ্যজুড়ে পালন করা হলো কর্মবিরতি। আগেই কর্ম বিরতির কথা জানাতে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। 2009 থেকে এখনও পর্যন্ত এআইসিপিআই অনুসারে সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ দেবার দাবি জানিয়েছে সংগঠন। এছাড়াও সমস্ত সরকারি শূন্যপদে স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগের দাবি তুলেছে সংগঠন।
সকল সরকারি কর্মীদের দাবী একটাই, বকেয়া ডিএ এবং শুন্যপদে স্বচ্ছ নিয়োগ।
কর্মবিরতি প্রসঙ্গে সংগঠনের সদস্যরা জানান, সোমবার অফিসে গিয়ে সই করলেও তাঁরা কোনও কাজ করেন নি। পাশাপাশি জেলায়-জেলায় কর্মীদের মিছিল করার নির্দেশ দিয়েছে সংগঠন। সোমবারে ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে প্রচুর কর্মচারিরা যোগ দিয়েছেন। তাঁরা ক্রমাগত স্লোগান তুলেছেন যেখানে তাঁদের একটাই দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে, তা হলো বকেয়া DA দিতে হবে ও শূণ্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ধর্মতলাতে অনশনেও সামিল হয়েছেন তিনজন সরকারি কর্মী। তাঁদের অনশন চারদিনে পড়ল সোমবার। এছাড়াও সরকারি কর্মীরা হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন, যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাঁদের বকেয়া ডিএ না দেন, তাহলে সরকারকে তাঁরা অচল করে দেবেন। অর্থাৎ সরকারি অফিসগুলিতে কর্মীরা কোনও কাজ করবেন না। ধর্মতলাতে উপস্থিত এক আন্দোলনকারী বলেন, “18 দিন ধরে অবস্থান করছি। যদি দাবি পূরণ না হয় তাহলে অনশন চলবে। যতদিন না বকেয়া টাকা পাব এই আন্দোলন চলবে। এই টাকা আমাদের প্রাপ্য। আমরা বলছি না আমাদের মাইনে বাড়িয়ে দাও। যেখানে হাইকোর্টের রায় রয়েছে সেখানে কেন আমরা বকেয়া টাকা পাব না।”
সরকারি কর্মীদের এই আন্দোলনকে সমর্থন করে বিজেপি সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি বলেন, “সরকারি কর্মীদের কথা কেউ শোনেনি। একদিন না একদিন বিস্ফোরণ হবেই। রাজ্যের মানুষ একসময় ক্ষেপে যাবেন। আজ যদি এই কর্মচারিরা পেন ডাউন করেন তাহলে গোটা রাজ্যের কী হবে?” ধীরে ধীরে তেজ বাড়ছে আন্দোলনের। কেবল কলকাতার ধর্মতলাতেই আর আটকে নেয় আন্দোলন। গোটা জেলাতে দেখা গেছে একই ছবি। এ দিন, ওয়েস্ট বেঙ্গল কোর্ট এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আসানসোল আদালত চত্বরে কর্মীরা কর্মবিরতি পালন করেন।
“আইন না মানলে দেশে থাকার অধিকার নেই”, বকেয়া ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে রাজ্যের মন্ত্রী!
অন্যদিকে, দেখা যায় বারাসত আদালতের গোটা লবি ফাঁকা। সকাল ১০টায় কর্মচারিরা এলেও তাঁরা কেউ কাজ করেন নি। দীর্ঘদিন তাঁরা ডিএ পাননি, তাই তাঁরা আজ কাজ করবেন না বলে জানান। একই চিত্র দেখা যায় বহরমপুরেও। ডিএ এর দাবিতে কর্মবিরতি পালন করা হয় মুর্শিদাবাদ জেলা আদালতে। পাশাপাশি ১৯ দফা দাবিতে কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান আদালত চত্বরে। ‘মেলা খেলা সবই হলো ডিএড টাকা কোথায় গেল’ এমন বিভিন্ন গান ও স্লোগানের মাধ্যমে তাঁরা এই বিক্ষোভ দেখান সোমবার।
ডিএ প্রতিবাদে চরম আন্দোলন, শুরু আমরণ অনশনও। গণছুটির ডাকে চাপ বাড়ছে সরকারের। বিস্তারিত দেখুন।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারা রাজ্যের সঙ্গে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সারাদিন কর্মবিরতি পালন করেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। সরকার খুব শীঘ্রই ডিএ নিয়ে কোনো ঘোষণা না দিলে আন্দোলন যে আরও তীব্রতর হবে আগামী দিনে, তা সহজেই অনুমেয় আজকের কর্মবিরতি পালনের চিত্র থেকে।
Written by Parna Banerjee.