বকেয়া ডিএ

হঠাৎ করে হয়তো বকেয়া ডিএ এর হিসেব চেয়ে বসবে রাজ্য সরকার।

বকেয়া ডিএ এর মামলা নিয়ে সরগরম রাজ্য। জনে জনে আলোচনা এখন তুঙ্গে। সবাই তাকিয়ে আগামী 9ই অক্টোবর এর দিকে। সেদিনই হচ্ছে বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত আদালত অবমাননার রায়। গত 22শে সেপ্টেম্বর কনটেম্পট মামলা আদালতে ওঠার কথা থাকলেও তা সরকারি কর্মী সংগঠনের অনিচ্ছাকৃত কিছু ভুলের কারণে নতুন তারিখ দেওয়া হয়েছে।

এই নিয়ে স্যাট এবং হাইকোর্টে মামলার রায় এবং রিভিউ পিটিশন নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীরা মোট 6 বার জয়ী হয়েছেন। সুতরাং বারবার প্রমাণিত হচ্ছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ পাবার ন্যায্য অধিকারের দাবি ন্যায় এবং যুক্তি সহ আইন সম্মত একটি বিষয় হিসেবে।

গত দুই বছরের খারাপ অর্থনৈতিক হালের জন্য কেন্দ্র তাদের কর্মীদের বকেয়া ডিএ বৃদ্ধির প্রসঙ্গটি বন্ধ করে রাখলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার পরে সকল বকেয়া কয়েকটি ধাপে ধাপে মিটিয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি আবার এক কিস্তি বকেয়া ডিএ ঘোষণা হবে খুব শীঘ্রই। কিন্তু এই রাজ্যে বকেয়া জমতে জমতে 31% তে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

পরবর্তী পে কমিশনের শুরু হবার কথা 2026 সালে। তাহলে কি একবারেই সব মিটবে রাজ্য সরকার? যে ভাতাকে কর্মীদের অধিকার বলে উল্লেখ করেছে আদালত, সেই ভাতা দিতে কেন এত অনীহা রাজ্যের? উচ্চ থেকে উচ্চতর আদালতে আর কতদিন ধরেই বা চলবে এই লড়াই?

ঠিক কত মহার্ঘ ভাতা বকেয়া আছে? সরকারি কর্মী সংগঠনের তরফ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২০ সালে ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মীদের বক্তব্য, আগে তারা 15% হারে HRA পেতেন।

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অ্যাকাউন্টে কবে ঢুকবে Salary, সিদ্ধান্ত জানাল নবান্ন।

কমিশনের সুপারিশে হল 3% কমিয়ে 12% করা হয়। আর অন্য দিকে ডিএ বাবদ 3% দেওয়া হয় নতুন পে কমিশনের শুরুতে। সুতরাং, আদতে কোন ডিএ দিচ্ছে না রাজ্য। শুধু এক খাত থেকে অন্য খাতে দেওয়া হয়েছে। অনেকের আবার দাবি, পুরোনো পঞ্চম বেতন কমিশনে যা বেতন পেতেন এখন তার খুব একটা পরিবর্তন হয় নি। এছাড়াও অনেক শিক্ষকেরা সিনিয়রীটির সুবিধা পাচ্ছেন না।

রাজ্য সরকারের অধীনে বিভিন্ন স্কেলে কর্মীদের বকেয়া কেমন আছে তার একটা হিসেব করলে দেখা যায় যে, একজন গ্রুপ ডি কর্মীর মোট বকেয়া ডিএ হিসেবে পাওয়ার কথা কমপক্ষে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।   অপরদিকে একজন গ্রুপ সি কর্মীর বকেয়া আছে প্রায় ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা।

আপার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্টের ক্ষেত্রে বকেয়া ডিএ ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, হেড অ্যাসিস্ট্যান্টের ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ও সেকশন অফিসারের প্রায় ৬ লক্ষ টাকা এরিয়ার হিসেবে পাওয়া উচিত। ষষ্ঠ বেতন কমিশনে বকেয়া হিসেবে বর্তমানে কেন্দ্রের তুলনায় ৩১ শতাংশ কম পাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা।

সরকারি কর্মচারীদের অবসরের বয়স 65 করার প্রস্তাব মন্ত্রীসভায়, কত সালে জয়েন করলে এই সুবিধা পাবেন।

এক বিশেষজ্ঞের কথায়, “কোন সময়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের দেওয়া ডিএ-র মধ্যে কত ফারাক ছিল, সেই হিসাব কষলে এরিয়ারের অঙ্ক ৭০ হাজার কোটির আশেপাশে পৌঁছতে পারে। রোপার আইনে বিষয়টি উল্লেখ থাকায় সুপ্রিম কোর্টেও রায় বদলানোর আশা ক্ষীণ। পরে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের হিসেবে ৩১% ডিএ দিতে আরও ২৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হতে পারে সরকারের।”

সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের এই বকেয়া ডিএ মেটাতে প্রয়োজন হবে 25 হাজার কোটি টাকা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাঝে মাঝেই বৈঠকে বলেন যে, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প, কন্যাশ্রী প্রকল্প, সবুজ সাথী প্রকল্প, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ইত্যাদিতে প্রচুর টাকা ব্যয় করছেন। তাই আর নতুন করে কিছু করা যাবেনা। কারণ হাতে টাকা নেই। এমন আরো খবরের সন্ধান পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নজর রাখুন। ধন্যবাদ। Written by Mukta Barai.