পুরানো কয়েন বা নোট ‘UNC’ হলেই মিলবে লাখ টাকা! আছে কি 1 টিও? তাহলে তো পুজার আগেই লাখপতি! জানুন বিস্তারিত।

পুরানো কয়েন বিক্রি করে হয়ে যান লাখপতি।

অনেকেরই ধারণা আছে যে কয়েন পুরানো হলেই তার বেশ দাম পাওয়া যাবে। কিন্তু পুরানো কয়েন বিক্রির বিষয়টি তেমন নয়। বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অ্যালফ্রেড মার্শালের ১৮৯০ সালের একটি আবিষ্কার সারা বিশ্বের অর্থনীতির ধারণাকে অনেকটাই পাল্টে দিতে পেরেছিল। তিনি আবিষ্কার করেছিলেন একটি গ্রাফ যার নাম ‘ডিমাণ্ড অ্যাণ্ড সাপ্লাই’ গ্রাফ।

যেখানে তিনি একটি গ্রাফের মাধ্যমে বলেছিলেন, বাজারে কোন জিনিসের আমদানি যত কম থাকবে তার দাম তত বেশি হবে। সুতরাং এটা পরিস্কার হয়েই গেল, যে সকল পুরানো কয়েন এর সংখ্যা বাজারে খুবই কম, বলতে গেলে না থাকার মতোই, সেই সকল কয়েনের দাম সত্যিই অনেক বেশি। তবে আপনি কি করে বুঝবেন যে কোন কয়েনের কত ডিমান্ড? আসুন, এই বিষয়ে আরও গভীরে জেনে নি।

প্রথমে আপনাকে পুরানো কয়েন চিনতে শিখতে হবে। কোন পুরানো কয়েন আসল আর কোন পুরানো কয়েন নকল – এই বিষয়টি ভালো করে বুঝতে হবে। কারণ বাজার ভরে গেছে নকল কয়েনে। এছাড়া কোনটি কত পুরানো, সেই কয়েনের ইতিহাস, কোথায় বিক্রি করলে পাওয়া যাবে সঠিক দাম- এসব খুঁটি নাটি জেনে নিতে হবে বিশদে। কোলকাতাতে বেশ কিছু দোকান আছে যারা এই পুরাতন কয়েনের কেনা বেচা করে থাকে।

সরাসরি খদ্দেরের কাছে পুরানো কয়েন বিক্রি করলে লাভ বেশি হলেও সেক্ষেত্রে রিস্ক থেকে যায়। তাই আপনি যদি সরাসরি কোন দোকানে বিক্রি করতে পারেন তাহলে আপনি নিরাপদে এই বিক্রির কাজটি করে নিয়ে ভালো পরিমানে অ্যায় করতে পারবেন। এছাড়াও কোলকাতাতে বছরের বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকটি নামী কয়েন একজিবিশন হয় যেখানে অংশ নিয়েও আপনি আপনার পুরানো কয়েন বিক্রি করতে পারেন।

তবে পুরানো কয়েন বিক্রিতে তার দাম নিয়ে অধিক আশা করা ঠিক নয়। কারণ অনেকেই উল্টো পাল্টা দাম হেকে বসেন। কয়েনের কোয়ালিটি এর দামে অনেক তারতম্য ঘটে। UNC কয়েন হলে আপনি সেই কয়েনের দাম পাবেন সবথেকে বেশি। আসুন জেনে নি, UNC কয়েন কি? অনেকেরই ধারণা থাকতে পারে যে, UNC কয়েন হয়তো কোন বিশেষ জাতীয় কয়েন। কিন্তু বিষয়টি হল- UNC হল Uncirculated Coin. অর্থাৎ, যেই কয়েন হাতে হাতে বদল হয় নি।

পুরানো কয়েন গুলি মার্কেটে সাধারণের হাতে পড়লেও তার হাত বদল হয়নি। আবার কয়েনের Sheldon বা European Grading System অনুসারে ৬০+ রেটিং করা হয়েছে, সেই সকল কয়েনকেই বলা হয় UNC কয়েন। কিছু কয়েন আছে যেগুলি হাত বদল হলেও এখনও প্রায় নতুনের মতোই আছে, সেগুলিকেও UNC কয়েনের মধ্যে ধরা হয়। এছাড়াও কয়েনে এই ক্যাটাগরিয়ে First Strike Coin এবং Second Strike Coin হিসেবেও কয়েনের ভাগ করা হয়ে থাকে।

এছাড়া আরও একটি বিষয় জেনে নিন, যাকে বলে – “Reeded/ Milled Edged Coin”. অর্থাৎ, কয়েনের ধারগুলিতে লম্বা লম্বা দাগ কাটা থাকে যা ঐ নির্দিষ্ট কয়েনের সিক্যুরিটি হিসেবে দেওয়া থাকে। ভারতের লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর কয়েনে এটা দেখা যায়। এ ছাড়াও “Plain Edged Coin” এর ক্ষেত্রেও মিলতে পারে অনেক মূল্য।

অনেকেই এই সব না জেনেই ভাবেন যে তার পুরানো কয়েন এর দাম অনেক। এগুলি মেনে চললেই তবে আপনি ভালো দাম পাবেন। আবার কয়েন পুরানো না হলেও বেশ দাম পাওয়া যেতে পারে। যেমন ২০০৭ সালের কয়েনের মধ্যে আছে Cross কয়েন। এগুলি মার্কেটে কম সংখ্যায় আছে। তাই এর ভালো দাম আছে এখনই। কারণ এগুলি বাজারে বেশি আসে নি। এছাড়া আছে মহাত্মা গান্ধির খাঁদি ও ভিলেজ কয়েন, যার বাজারে ভালো দাম আছে।

আপনার কাছে এই পুরাতন কয়েনগুলো থাকলেই আপনিও হতে পারেন কোটিপতি, অনলাইনে কিভাবে বেচবেন দেখুন।

কোয়ালিটি, UNC, Mint Coin- এই সব দিয়েই কয়েনের দাম ঠিক হয়। তবে কোন পুরানো কয়েন ফেলনা নয়। বাজারে কেই দরে বিক্রি হওয়া কয়েনও আছে। ২ টাকার কয়েনের Face Value ২ টাকাই। এর কম কেউ দেবে না। যদি কেজি দরেও বিক্রি হয়, তাহলেও আপনি তার দাম ২ টাকার বেশিই পাবেন। তার কম নয়। খুব ভালো অবস্থায় থাকলে তার দাম আরও বেশি। যেমন ১৯৮৮ সালের ১০ পয়সার কলকাতা মিন্টের কয়েন যা স্টিলের তৈরি ছিল। এই কয়েনে ‘ভারত’ লেখার পরিবর্তে ভুলে ছাপা হয়েছিল ‘মারত’। তাই এখন এই কয়েনের এখন ভালো দাম পাওয়া যায়। যেকোনো ভুল প্রিন্টের দামই বেশি।

অনেক জায়গা আছে পুরানো কয়েন বিক্রি করার জন্য। অনলাইন পোর্টাল, ফেসবুক এর মত জায়গায় বিক্রি করা যায়। এছাড়া অনেক পোর্টাল রয়েছে, যেখানে এগুলো বিক্রি হয়। তাছাড়া অকশন হাউজে বিক্রি করা যায়। এছাড়া কোলকাতার GPO অর্থাৎ, পোস্ট অফিসগুলিতে শনিবারে মিনি কয়েন বাজার বসে। সেখানে কয়েনের কেনা বেচা হয়। জেলাতে একজিবিশন হলে সেখানেও বিক্রি করা যায়।

মাত্র ২ টাকার পুরাতন কয়েনের বিনিময়ে পেয়ে যান ৫ লাখ টাকা !!! অনলাইনে বিক্রয় করার সঠিক পদ্ধতি।

তবে অবৈধ ওয়েবসাইটের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। কারণ তারা অনেক টাকার লোভ দেখায় কিন্তু আদতে রেজিস্ট্রেশনের নামে হাতিয়ে নেয় আপনার গোপনীয় তথ্য। ভারতের প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ এই পুরানো কয়েন বিক্রি করে নিজের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তাহলে আপনি পারবেন না কেন? অনেকেরই কাছেই পুরানো কয়েন আছে। সেগুলি সম্পর্কে ইন্টারনেটে বিস্তারিত জেনে নিজেই দাম ঠিক করে ফেলুন যে, আপনার কয়েনের দাম কত হওয়া উচিত? আপনাকে তাহলে কেউ ঠকাতে পারবে না।

অনেক বই আছে কয়েনের ওপরে যেগুলি কিনে পড়ে নিয়ে নিজের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে পারেন।পরবর্তীকালে আরও এই ধরণের নতুন খবরের সন্ধান পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নজর রাখুন। নতুন আপডেটগুলি পড়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করে তুলুন। আপনার মূল্যবান কমেন্ট করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button