এখন অন্যায় করলেই শাস্তি পাবে পড়ুয়ারা! কড়া ভাষায় বকুনি দিতে পারবেন শিক্ষকরা। এমনই রায় দিলো হাইকোর্ট
আগেকার যুগে আমরা দেখতাম স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা ছাত্র ছাত্রীদের পড়ানোর পাশাপাশি তাদের ভুল গুলোকে শুধরে দেওয়ার জন্য কিংবা তাদের করা অন্যায়ের জন্য অনেক সময় শাস্তি দিয়েছেন বা বকেছেন। কিন্ত এই সময় দাড়িয়ে সেইসব শাসন যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছে। আর তার জন্যই ছাত্র ছাত্রীরা যেন আরও বেশি বিশৃঙ্খল হয়ে উঠেছে। কারণ তারা জানে কোনো অসভ্যতা বা দুষ্টুমি করলেও কোনো রকম বড়ো শাস্তি তারা পাবেনা শিক্ষক শিক্ষিকাদের থেকে।
Teacher May Scold Any Students Order by High Court
তার কারণ এখনকার যুগে ছাত্র ছাত্রীদের গায়ে হাত তোলা বা শাস্তি দেওয়ার মতন কোনো কিছু পথ অবলম্বন করা যাবেনা শিক্ষক শিক্ষিকাদের এমনটাই নির্দেশ ছিল। কিন্ত কয়েক বছর আগে এই ছবিটা অন্যরকম ছিল। বরং তখনকার সেই স্কুলের শিক্ষকদের কড়া বকুনি ও মারের ভয়ে জীবনের পথে আদর্শগত ভাবে বড়ো হতে দেখা গিয়েছে ছাত্র ছাত্রীদের।
আর এখনকার সময় ছাত্ররা জানে হাজার অসভ্যতা করলেও কোনো কড়া শাস্তি তারা পাবেনা আর সেইজন্য তারা অনেকটাই বিশৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। আগের যুগে যখন স্কুলের পড়ুয়ারা পড়া না পারলেই বা বিশৃঙ্খল আচরণ করলেই তাদের দমাদম দিতেন শিক্ষকরা।
কান ধরে ওঠবোস, কানমলা, বেত দিয়ে, স্কেল দিয়ে মার এসব তো লেগেই থাকত। সেইসাথে কড়া ভাষা. বকাঝকা আর গার্ডিয়ান কল তো লেগেই থাকতো। এতে যে শিক্ষক ও পড়ুয়ার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটত তা নয়। যেমন দুষ্টুমি করলে শিক্ষকরা বকা দিতেন তেমন অন্যসময় কাছে টেনে ভালোবাসতেন।
আর এই বকা দেওয়া বা মারধরের জন্য কোনো অভিভাবক স্কুলে এসে নালিশ করতেন না। কিন্ত বর্তমান সময়ে চিত্রটি অন্য। কোনো ছাত্র ছাত্রীকে সামান্য বকাঝকা করলেই সেই ছাত্র ছাত্রীর অভিভাবক স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে নালিশ করেন। তবে এবার শিক্ষকরা পড়ুয়াদের কড়াভাবে বকাঝকা করতে পারেন কি না তা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করলো পাঞ্জাব হাইকোর্ট।
এক নাবালিকা পড়ুয়ার আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা থেকে এক শিক্ষককে মুক্তি দিল হাইকোর্ট। বিচারপতির সমস্ত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে বলেছেন কোনও পড়ুয়া পড়াশোনায় দুর্বল হলে তার উন্নতির জন্য বা কোনও পড়ুয়া বিশৃঙ্খল আচরণ করলে শিক্ষক মহাশয় কড়া ভাষা প্রয়োগ করতেই পারেন।
অধিকাংশ পড়ুয়ার মনেই এনিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া হবে না। যদি কোনও অতিসংবেদনশীল পড়ুয়া এনিয়ে আত্মহত্যা করে তবে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হলে তা হবে বিচারের নামে প্রহসন। তবে সেই সঙ্গেই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ যে যদি কোনও শিক্ষক পড়ুয়াকে হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে তবে অন্য দৃষ্ঠিভঙ্গি থেকে তার বিচার করতে হবে।
প্রচন্ড গরমে স্কুলের মিড ডে মিলের মেনুতে বদল। নতুন মেনুতে কী থাকছে? পড়ুয়াদের কী পছন্দ হবে?
প্রসঙ্গত, পাঞ্জাবের জলন্ধরে এক স্কুল পড়ুয়া নাবালিকাকে এক স্কুল শিক্ষক হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ছাত্রীটি সুইসাইড নোটেও এনিয়ে উল্লেখ করেছিল। জলন্ধরের অতিরিক্ত দায়রা আদালতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চার্জও গঠন করা হয়। এরপর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি হাইকোর্টে যান।
হাইকোর্টের বিচারপতি শিক্ষকের পক্ষেই রায় দেয়। কারণ তিনি যে ওই পড়ুয়াকে হেনস্থা করেছেন তার কোনও প্রমাণ আপাতত পাওয়া যায়নি। এমনকী শিশুর অধিকার রক্ষা আইন অনুসারে স্কুলের তিন সদস্যের কমিটিও ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগের কোনও প্রমাণ হাজির করতে পারেননি। সেক্ষেত্রে আপাতত রেহাই পেয়েছেন ওই শিক্ষক।
এছাড়া হাইকোর্টের বিচারপতি বলেন ছাত্র ছাত্রী কোনো রকম বিশৃংখল আচরণ করলে বা পড়াশুনায় দুর্বল হলে শিক্ষক শিক্ষিকা পারেন সেই ছাত্র ছাত্রীকে বকাঝকা করতে বা ছোটখাটো শাস্তি দিতে। এইজন্য সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো অপবাদ আনা যাবেনা। স্বাভাবিকভাবে এই রায়ের পর সেই শিক্ষক অনেকটাই স্বস্তি পেয়েছেন।