পঞ্চায়েত ভোট শেষ হতেই পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ডিএ নিয়া বড় খবর এলো।
বকেয়া মহার্ঘ ভাতা বা বকেয়া ডিএ পাবেন কবে?
বকেয়া ডিএ বা Dearness Allowance কবে পাবেন? একমাত্র সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। দীর্ঘদিন ধরেই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কলকাতায় রাস্তার উপরে বসে রয়েছেন। একের পর এক নতুন নতুন আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। কখনো কর্মবিরতি করেছেন, কখনো ধর্মঘট করেছেন, কখনো ডিজিটাল স্ট্রাইক করেছেন, আর এবার নতুন কর্মসূচীর কথা জানা গেছে।
যৌথ মঞ্চের স্যোশাল মিডিয়া এর মাধ্যমে সম্প্রতি শোনা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের কর্মীদের একাংশ দুই দিন ধরে কর্মবিরতি করবেন। যার ফলে পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election) আগে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে বারবার বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য রাখা হচ্ছিল।
কখনো বলছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে যোগ দেবেন না, আবার কখনো বলছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া পঞ্চায়েত ভোটের কাজে যাবেন না। বিভিন্ন ধরনের দাবি জানানো হলেও তাতে সেই অর্থে কোনো কাজ হয়নি। যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারীদের এই দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অধিকাংশের মধ্যেই কোনো প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ফলে যৌথ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা এখন শুধু তাকিয়ে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের দিকে। কারণ বকেয়া ডিএ মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন রয়েছে।
প্রসঙ্গ, চলতি বছরেই কলকাতা হাইকোর্ট তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া DA মেটানোর নির্দেশ দেয়। রাজ্য সরকার সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার জন্য হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানায়। কিন্তু তারপরেও সেই একই নির্দেশ বহাল থাকে। এর মধ্যেই আবার রাজ্য বাজেটে রাজ্য সরকার ৩ শতাংশ DA ঘোষণা করে। ফলে এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৬ শতাংশ হারে Dearness Allowance পাচ্ছেন। তবে তাতে তারা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাদের একাংশের দাবি, কেন্দ্রীয় হারেই বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়াঃ
আর সেখানেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকাঠামো আর রাজ্য সরকারের পরিকাঠামো সম্পূর্ণ আলাদা। ফলে রাজ্য সরকারের চাকরি করে কেন্দ্রীয় হারে DA দাবি করা যায় না।
এর মধ্যেই হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি (SLP) দাখিল করা হয়। বকেয়া DA মামলাটি এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। এখনো পর্যন্ত সেখানে শুনানি শুরু হয়নি। তবে চলতি মাসেই সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া DA মামলার শুনানি শুরু হতে পারে। আর সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ।
আরও পড়ুন, এবারের দুর্গা পুজোয় ছুটি কমে গেল, দেখুন পুজোর ছুটির তালিকা।
তারা ভাবছেন, হয়তো সুপ্রিম কোর্ট তাদের বকেয়া ডিএ নিয়ে কোনো নির্দেশ দিতে পারে। আর তারপরেই রাজ্য সরকার এই ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে এটা তাদের শুধুমাত্রই আশা। সেই দিকে তাকিয়েই তারা দিন গুণছেন। এদিকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চের কর্তাদের ও একাধিক অভিযোগে ইতিমধ্যেই তাদের একাংশের মধ্যে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। কখনও আর্থিক কারন, কখনও নেতৃত্বের হাতছানি। আর এর মধ্যেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ এর ভবিষ্যৎ কি হবে, কেউ জানে না।
আরও পড়ুন, সেভিংস একাউন্টের লিমিট বেঁধে দিলো রিজার্ভ ব্যাংক, কত টাকা রাখতে পারবেন?
বকেয়া ডিএ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চাপানউতোর চলছে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন যৌথ মঞ্চের তরফে বারে বারে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি করা হলেও তাতে সেরকম কিছু প্রভাব দেখা যায়নি। এবার তারা তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। এবার দেখার বিষয়, সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া DA মামলায় শুনানিতে কি নির্দেশ দেয়।