Primary TET – বেঁচে গেল 32000 প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি, সুপ্রীম কোর্টের রায় সহজ ভাষায় বুঝে নিন।

WBBPE Primary TET 2014 পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে চাকরি পেয়ে ৬ বছর পর চাকরি বাতিলের নির্দেশে কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে ৩৬০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের। পরে অবশ্য সেই লিস্ট থেকে বাদ যায় ৪০০০ শিক্ষক। এবং শেষ মেষ সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৩২০০০। জাস্টিস গাঙ্গুলী তথা মহামান্য বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ কে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে রাজ্য সরকার তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE).

এক শুনানিতেই সেই রায় কার্যত স্থগিত করে দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কে নির্দেশ দেয়, আগের বেতনই বহাল থাকবে, আর তিন মানের মধ্যে শিক্ষকদের যোগ্যতার প্রমান দিতে হবে। আর অন্যদিকে এই মামলা সুপ্রীম কোর্টে (Supreme Court) গড়ায়। আর সেখান থেকে যে নির্দেশ এসেছে তাতে কার্যত প্রাথমিক শিক্ষকদের বিপদ পুরোটা না কাটলেও আপাতত স্বস্তি মিলেছে। আর পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিন ভোটের ডিউটিতে গিয়ে কার্যত তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। যদিও মামলাটি আবার হাইকোর্টে বিচারাধীন, তবুও আপাতত বিপদ কেটেছে বলেই মনে করছেন Primary TET 2014 এর 32000 শিক্ষকদের একাংশ।

Primary TET 2014 নিয়ে সুপ্রীম কোর্টের রায়

৩২০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার পর সুপ্রীম কোর্টে মামলা করেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও বাতিল প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ। আর সেই মামলার শুনানিতে গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার সুপ্রীম কোর্ট (Supreme Court) তথা দেশের শীর্ষ আদালতে মহামান্য বিচারপতি জেকে মহেশ্বরী এবং কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। এদিন সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ কোলকাতা হাই কোর্টের চাকরি বাতিলের নির্দেশ খারিজ করে দেয়।

প্রাথমিক শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ কি?

চাকরি বাতিলের নির্দেশ খারিজ হলেও ৩২০০০ প্রাথমিক শিক্ষক পুরো ক্লিনচিট পাননি! তবে সুপ্রীম কোর্টের এর রায়ের ফলে চার মাসে মধ্যে ফের ইন্টারভিউ বা নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসার যে নির্দেশ দিয়েছিলো সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সহজ কথায়, ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে আবার নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে না। বা ইন্টারভিউতে বসতে হবে না। এই মামলা আবার শুনানি হবে কোলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় যে নির্দেশ দেওয়া হবে, সেটি বহাল থাকবে।

Teacher Recruitment (শিক্ষক নিয়োগ)

আদালত কে কি জানায় পর্ষদ?

গত ১২ই মে এর নির্দেশ অনুসারে অভিযোগ ওঠে ৩২০০০ এর মধ্যে অনেকেই সঠিক ভাবে ইন্টারভিউতে অংশ নেয়নি, এবং তারা প্রশিক্ষিত ছিলেন না। এর উত্তরে WBBPE পর্ষদ জানান, পর্ষদের Primary TET 2014 নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও NCTE এর গাইডলাইন অনুসারে ২০১৯ এর ৩১শে মার্চ এর পর প্রশিক্ষণ ছাড়া নিয়োগ অবৈধ। এর আগে প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক ছিলো না।

তাই NCTE এর নিয়ম মেনে করা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে যেহেতু অপ্রশিক্ষিতরা আবেদন করার যোগ্য ছিলো, তাই তারা পাশ করলে চাকরি পাওয়ার ও যোগ্যতা রাখেন। আর NCTE এর নির্দেশ মতো চাকরি পাওয়ার পরও তাদের ODL Mode এ চাকরিরত অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের আগেই NCTE এর বোর্ড বা NIOS এর মাধ্যমেই প্রশিক্ষণ সমপন্ন করা হয়। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সরকার দ্বারা পরিচালিত ছিলো, রাজ্য সরকার বা পর্ষদ কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। অর্থাৎ এক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙ্গার কোনও প্রমান নেই। আর এই বক্তব্যের পরই কার্যত এই নির্দেশ দেন সুপ্রীম কোর্ট।

Primary TET 2014 মামলাটির বিচার এখন কোথায় হবে?

গতকাল সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশ বা রায় ঘোষণার পর এই মামলাটি আর জাস্টিস গাঙ্গুলীর বেঞ্চে থাকছে না বলেই মনে করা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মতো Primary TET 2014 মামলাটি হাই কোর্টের নতুন ডিভিশন বেঞ্চে নতুন করে আবার শুনানি হবে। এই মামলার আগের রায় আর থাকছেনা। তাঁরা নতুন করে বিচার করবেন, নতুন করে শুনানি হবে এবং নতুন করে রায় ঘোষণা করবেন। এবার Primary TET 2014 মামলাটি যাবে কোলকাতা হাই কোর্টের মহামান্য বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। এই মামলার শুনানি কবে থেকে শুরু হবে, সেই ব্যাপারে খবর পেলেই সুখবর বাংলায় আপডেট দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন, প্যান কার্ড চালু নাকি বন্ধ, চেক করুন ঘরে বসে, জেনে নিন পদ্ধতি।

পরবর্তী পদক্ষেপ

প্রসঙ্গত রাজ্য সরকার বা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তথা ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের আইনজীবী হিসাবে মামলাটি সুপ্রীম কোর্টে লড়েন আইনজীবী মুকুল রোহতগি, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পার্থ দেব বর্মণ। আর সবকিছু ঠিক ঠাক থাকলে এই মামলার রায় ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে যেতে পারে। অর্থাৎ চাকরি বাতিলের নির্দেশ আর আসবে না বলেই আশাবাদী সরকার পক্ষের আইনজীবী। তবে এই রায় ঘোষণার পর চাকরি বাতিল তথা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে চাকরী প্রার্থীদের একাংশ যারা এই মামলা করেছিলেন, বা মামলাকারী আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারির প্রতিক্রিয়া বা আইনি পদক্ষেপ কি হয়, এবার এটাই দেখার। এই বিষয়ে আপনার মতামত নিচে কমেন্টে জানাতে পারেন। পরবর্তী আপডেট পেতে সুখবর বাংলা ফলো করুন।

Related Articles

5 Comments

  1. সত্যের জয় হবেই। মিথ্যা মামলা সাজিয়ে ৩২০০০ পরিবারের ক্ষতি করার অপপ্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে এটাই তো স্বাভাবিক। মহামান্য আদালত আশা করি সত্য অনুসন্ধান করে শুধুমাত্র দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক নেবে। শুধু যারা অর্থের বিনিময়ে চাকরি পেয়েছে তারাই নয় যারা অর্থের বিনিময়ে চাকরি দিয়েছে তাদেরও সমান শাস্তি দেওয়া হোক। একই সঙ্গে সেই সকল নামীদামী উকিলদের কাছে নিবেদন তারা যেন শুধু অর্থের প্রয়োজনে এমনভাবে সমাজের এতবড় ক্ষতি না করেন।

  2. আজকাল সুপ্রীমকোর্ট লোয়ার কোর্টের ও নীচে নেমে গেছে, দুর্নীতিদের পক্ষে নানা স্থগিতাদেশ দিচ্ছে। পশ্চিম বাংলায় চাকরি চুরি হয়েছে এটা গোটা রাজ্যের মানুষ ভালো ভাবেই জানে, তবুও সর্বোচ্চ আদালত বোঝেনা, এই রাজ্যসরকার শুধু চরম দূর্নীতিগ্রস্ত নয়, গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছে। এই সব অশিক্ষিতরা সমাজ ধ্বংস করবে,উচ্চ আদালত তার অংশীদার থাকবে।

    1. মাত্র ঐ একটা point তুলে ধরাতেই রায় পালটে গেল! Hc এতো বড়ো রায় দিল ওটা না জেনেই? বাকি point গুলোর কোন উললেক নেই কেন?
      যেমন- omr e 00.
      Omr sheet e বিকৃতি ইত্যাদি বয়াপার গুলোর।

  3. Very good news. Illegal recruitment happened at the time of Congress government, CPM government and now in TMC government. High Court and media make it a big issue.

  4. 32000 হাজার শিক্ষকদের চাকরি না যায় এবং যারা পেটিটিশনার তাঁদের দিকে দেখা উচিত কারণ তারা যোগ্য l সে দিকে নজর রাখা উচিত মহামান্য কলকাতা হাই কোর্ট এর l

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button