পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী নিয়োগের নিয়ম বদল, চাকরি পেতে হলে আজ থেকে এই নিয়ম বাধ্যতামূলক হলো।
আর আগের নিয়মে নয়, চাকরি পেতে হলে এটা করতেই হবে।
পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া শিক্ষকের চাকরিতে আর নিয়োগ হবে না। ফলে এবার থেকে শিক্ষক- শিক্ষিকাদের চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যাচাইকরণের পদ্ধতি চালু হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের পুলিশ ভেরিফিকেশন (Police Verification) এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যাচাই এর নিয়ম ছিল না।
২০১৬ সালে শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং স্বাস্থ্য যাচাইপত্রের নিয়ম শিথিল করা হয়েছিল। আর তারপর থেকেই শিক্ষা দপ্তরকে রাজ্যের শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের সরকারি স্কুলে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ও স্বাস্থ্য যাচাই পত্র দিতে হতো না।
কিন্তু এর আগে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়ার পরে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং স্বাস্থ্য যাচাইপত্র দেখা হতো। তারপরেই তাকে নিয়োগ করা হতো। ২০১৮ সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে এই বিষয়ে জানানো হয়, পুনরায় শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষা কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং স্বাস্থ্য যাচাই পত্র নীতি চালু করা দরকার।
এবার দেখা গেল, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে ফের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ও স্বাস্থ্য যাচাই পত্র বাধ্যতামূলক (Police and Health Verification Mandatory for Teachers and Non Teaching Staff Recruitment) করা হলো। এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এর আগেই এই নীতি শিক্ষকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে ফিরিয়ে আনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এবার পাকাপাকিভাবে সেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়া হলো। এরপর থেকে শিক্ষকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং স্বাস্থ্য যাচাইপত্র বাধ্যতামূলক।
এই বিষয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা বলেন, রাজ্য সরকার এই নীতি নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করছে। তার কারণ, এই মুহূর্তে বহু যোগ্য প্রার্থী রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন, গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বসে অবস্থান বিক্ষোভ করেছেন, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ফলে তাদের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। এর মাধ্যমেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন, প্যান কার্ড চালু নাকি বন্ধ, চেক করুন ঘরে বসে, জেনে নিন পদ্ধতি।
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষা সমিতির কার্যকরী সভাপতি জানান, বিরোধীদের সমালোচনা করাটাই নিয়ম। তারা সমালোচনার জন্যই যদি সমালোচনা করে তাহলে কিছু বলার নেই। এখানে কোনো নতুন নিয়ম চালু হয়নি। আগেই পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং স্বাস্থ্য যাচাই পত্র দিয়েই শিক্ষকদের নিয়োগ পেতে হতো। সেই নিয়ম মাঝখানে শিথিল হয়েছিল। ফের সেই নিয়ম চালু হচ্ছে। এখানে আশ্চর্যের কিছু নেই।
এরপরেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি জানান, তাহলে কি বিরোধী সংগঠনের নেতারা চাকরিতে স্বচ্ছতা আসুক এটা চাইছেন না? এর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতাই আসবে।
ফলে সরকারের এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এবার থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষা কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং স্বাস্থ্য যাচাই পত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে গেল।