প্রাথমিক টেট – 2022 নিয়ে 2 টি মামলা হাইকোর্টে। হবে কি পরীক্ষা? বিস্তারিত আলোচনায় একাধিক বিষয় দেখুন।
পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক টেট 2022 নিয়ে জল্পনা আরো ঘোরালো হচ্ছে।
অনলাইনে আবেদন চলছে প্রাথমিক টেট 2022 এর পরীক্ষার জন্য। পরপর প্রকাশিত হয়েছে একাধিক সংশোধনী নোটিস। তবে এবারে দায়ের হল হাইকোর্টে মামলা। উঠে এলো সেই পুরোনো প্রশ্ন ভুল বিষয়টি। তাহলে এবারে মামলার শুনানিতে কি বলা হবে? হতে পারে কি স্টে অর্ডার? সবিস্তারে পুরোটা দেখে নিন।
11 ই ডিসেম্বর হবে পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রাথমিক টেট পরীক্ষা। ফর্ম ফিলাপ শেষ হবে 14 ই নভেম্বর। তবে এর মধ্যেই মামলা করা হল হাইকোর্টে। এই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করেই করা হয়েছে এই মামলা। 2014 সালের প্রাথমিক টেটে প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল আগেই। সেই মামলার কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। এর মধ্যেই কি করে আবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পর্ষদ? এই নিয়েই আবার মামলা হাইকোর্টে।
কলকাতা হাইকোর্টে এখন চলছে পুজোর ছুটি। সেই কারণে এই মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর প্রাথমিক টেট পরীক্ষার ক্ষেত্রেও এখন বেশ সময় বাকি। তাই অবকাশকালীন বেঞ্চ মামলার শুনানি পিছিয়ে দিয়েছে। এই শুক্রবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের সিঙ্গেল বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। কিন্ত আদালত সরাসরি জানায়, পুজোর ছুটির পরে হাইকোর্টের রেগুলার বেঞ্চে শুনানি হবে।
পরীক্ষার্থীদের মতে, 2014 সালে প্রাথমিক টেট নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হবার ফলে কলকাতা হাইকোর্ট বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছে। বহিষ্কৃত হয়েছেন তৎকালীন পর্ষদ সভাপতি শ্রী মানিক ভট্টাচার্য মহাশয়। এই সকল যোগ্য প্রার্থীদের জায়গায় অর্থের বিনিময়ে চাকরী বিক্রি হয়েছে। সুতরাং, তাদের মতে 2014 সালের টেট পরীক্ষার্থীরা যোগ্য এবং তাদের দাবিও ন্যায্য। তাদেরকে চরম প্রতারণার স্বীকার হতে হয়েছে।
অপরদিকে, 2017 সালের প্রশিক্ষিত প্রাথমিক টেট পাশ আবেদনকারীদের মতে, তারাও বঞ্চনার স্বীকার। 2014 সালের টেট পাশ করা প্রার্থীদের সাথে সাথে তারাও ন্যায্য দাবি আদায়ের পথে নেমেছেন তারা। তাদের দাবি, পর্ষদই 2014 এবং 2017 সালের টেট পাশ ক্যান্ডিডেটদের মধ্যে বিবাদের মূল কারণ। তবে এর সুরাহা মিলবে কি করে?
2014 সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষার্থীদের 2 বার ইন্টারভিউ হলেও চাকরী বিক্রি হয়ে যাওয়ায় তারা সুযোগ হারিয়েছেন। অনেকেরই চাকরির বয়স শেষ। ফলে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে। আবার 2017 সালের প্রশিক্ষিত প্রাথমিক টেট পাশ আবেদনকারীরা প্রাথমিক টেট পাশ করলেও একবারও ইন্টারভিউ এর ডাক পাননি। যেহেতু ভ্যাকেন্সি আছে, আর তারাও প্রশিক্ষিত। সুতরাং তারা কেন ইন্টারভিউ এর সুযোগ কেন পাবেন না? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
2014, 2017 সালের প্রাথমিক টেট পাস করা প্রার্থীরাও এক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু তারা যদি এবারের সকলের সাথে আবেদন করেন, তাহলে কম্পিটিশন অনেক বেড়ে যাবে। ফলে তাদের চাকরির সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। কিন্তু আগের টেট পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ভুল নিয়ে মামলা হয়েছিল। সেই মামলার নিস্পত্তি হয় নি।
আবেদনের পরই বহু ফর্ম বাতিল, ফর্ম ফিলাপের আগে দেখুন, কি কারণে বাতিল হতে পারে টেট এর ফর্ম।
এর ফলে বর্তমানে জারি হওয়া নতুন বিজ্ঞপ্তি নিয়ে আপত্তি জানানো হচ্ছে। আগামী 14 ই নভেম্বর পর্যন্ত টেটে বসার জন্য আবেদন করা যাবে। আর পরীক্ষা হবে ডিসেম্বরে। হাতে অনেক সময় বাকি আছে। তাই বিচারপতি মামলার শুনানি পিছিয়ে বলেন যে, যেহেতু আবেদন করার জন্য এখনও পর্যাপ্ত সময় রয়েছে তাই মামলাটি আগামী মঙ্গলবার রেগুলার বেঞ্চেই শুনানি হবে।এছাড়া কলকাতা করুণাময়ীতে আন্দোলনে বসেন 2014, 2017 সালের টেট পাস পরীক্ষার্থীরা। পরে আদালতের নির্দেশের পর করুণাময়ী থেকে বিক্ষোভকারীদের তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কেন পুলিশের হস্তক্ষেপ? এই নিয়েও মামলা হয় হাইকোর্টে।
তাদের মতে, পর্ষদের নিয়োগ করার কোন সদিচ্ছা নেই। এই 11,000 এর সামান্য বেশি শুন্যপদের দাবীদার আসলে কারা? পর্ষদের বক্তব্য, এবারের ইন্টারভিউতে সকলেই বসতে পারবেন। কিন্তু, তাদের দাবি যে, এতো কম ভ্যাকেন্সিতে 2014, 2017 এবং এবারের TET – 2022 এর পাশ করা প্রারথীরা যদি সকলেই ডাক পান, তাহলে আবার নট – ইনক্লুডেড তৈরি হবে। সুতরাং, সমস্যা সমাধান তো হবেই না, বরং সমস্যা আরও বাড়বে।
পশ্চিমবঙ্গে TET – 2022 বন্ধের পথে। সবাই ঠিক হলে আসল ভুল কার? বিস্তারিত জানুন।
শুক্রবার সেই মামলারও শুনানি ছিল একই দিনে। বিচারপতি অমৃতা সিনহা ও বিচারপতি অজয় মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি ছিল। বিধান নগরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে থেকে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের রাতের বেলায় কেন পুলিশ এমন করল? ই বিষয়ে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তবে আদালতের মতে এই মামলা অতি জরুরি নয়। তাই আগামী সপ্তাহে অর্থাৎ মঙ্গলবার রেগুলার বেঞ্চে এই মামলা পাঠানো হয়েছে।
পরীক্ষা হবে 11 ই ডিসেম্বর, 2022. তবে তার আগে এই সকল মামলা, আন্দোলন, প্রতিবাদ বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়েই উঠে আসছে। তবে এগুলি নতুন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণে বেশ মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। প্রস্তুতি নিয়েও যদি পরীক্ষা না দিতে পারেন, তাহলে সব প্রচেষ্টাই বৃথা হবে। অপর দিকে 2014, 2017 এর দাবিতে তারা যথেষ্ট যুক্তি দিচ্ছে। এর সমাধান কোথায়? জানতে অবশ্যই নজরে রাখুন আমাদের ওয়েবসাইট, সুখবর বাংলাতে। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.