আবার নোট বাতিল – ফিরছে 6 বছর পর। সিদ্ধান্তে অনড় কেন্দ্র। কি বলছে সুপ্রিম কোর্ট? দেখে নিন।
গত বুধবারই নোট বাতিল বিষয়টি পুনরুত্থাপিত হল সুপ্রিম কোর্টে।
এই সুবিশাল ভারতবর্ষে সরকারি যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে গেলেই পেরতে হয় বেশ কিছু নিয়ম। 2016 সালে নোট বাতিল হবার পর আবার সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ বুধবার কেন্দ্র এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে (আরবিআই) 500 এবং 1000 টাকার নোট বাতিল করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে হলফনামা দাখিল করতে বলেছে, এই ধারার অধীনে সরকারের এটি করার ক্ষমতা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে RBI আইনের 26 নম্বর ধারা অনুযায়ী।
নোট বাতিল হলে কার সুবিধা হবে? সরকার, জনগণ, ব্যাঙ্ক – নাকি অন্য কারো। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আইনের ধারা নাম্বার ২৬ অনুসারে, সরকারের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তি তথা আইন সম্মত, তা খতিয়ে দেখে নিতে চায় বিচারপতি এসএ নাজির, বিআর গাভাই, এএস বোপান্না, ভি রামাসুব্রমানিয়ান এবং বিভি নাগারথনার সমন্বয়ে গঠিত পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ।
1978 সালের নোটবন্দীকরণের উদ্ধৃতি দিয়ে, চিদাম্বরম বলেছিলেন যে, “2016 সালের সিদ্ধান্তের জন্য সংসদের একটি পৃথক আইনের মাধ্যমে নোট বাতিল করা হয়েছিল এবং “ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আইনের 24 নম্বর এবং 26 নম্বর ধারাগুলিকে কারেন্সি নোটগুলিকে ডিমোনেটাইজ করার জন্য ব্যবহার করা যায় কিনা তা দেখা উচিৎ। যদি এই নোট বাতিলের মামলার নিষ্পত্তি না হয়, সরকার ভবিষ্যতে একই সিদ্ধানের পুনরাবৃত্তি করতে পারে”। তবে, অ্যাটর্নি জেনারেল দাখিলটির বিরোধিতা করেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে বিষয়টি এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে।
এই বক্ত্যব্যের প্রেক্ষিতে বিচারপতি নাগারথনা বলেন, “বিষয়টি হল সরকারের সিদ্ধান্ত এবং আমরা জানি লক্ষ্মণ রেখা কতটা। তবে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত যেভাবে বা যে পদ্ধতিতে নেওয়া হয়েছিল, তা সঠিক ছিল কিনা তা দেখে নেওয়া যেতে পারে। তবে এর জন্য আমাদের সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কথা জানতে হবে”। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছেন যে, “আদালত সরকার কর্তৃক গৃহীত অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সমানুপাতিকতার মতবাদ প্রয়োগ করেনি”।
RBI এর নির্দেশে আরও একটি সরকারী ব্যাংক বাতিল হলো, গ্রাহকের টাকার কি হবে?
সরকার কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই বিষয়ে চিদাম্বরম বলেন, “৭ নভেম্বর সরকারের কাছ থেকে একটি চিঠি পাওয়ার পর, আরবিআই বোর্ড 8 নভেম্বর, 2016-এ দিল্লিতে বৈঠক করে। একটি প্রস্তাব পাস করা হয়েছিল যাতে 500 এবং 1000 টাকার নোট বাতিল করার সুপারিশ করা হয়। আরবিআইয়ের সুপারিশ মন্ত্রিসভায় পাঠানো হয়েছিল, এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা গৃহীত হয়”।
তিনি আরও জানান, “রাত 8 টায়, প্রধানমন্ত্রী, সম্প্রচারে গিয়ে নোট বাতিলের ঘোষণা করেছিলেন। 24 ঘন্টার মধ্যে এই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে? 7 নভেম্বর তারিখের সরকারের চিঠিটিও রেকর্ডে নেই, এবং যেহেতু বিষয়টি এখানে মুলতুবি আছে, এই ক্ষেত্রে সরকার যা করতে পারে তা হল এই আদালতে সমস্ত প্রাসঙ্গিক ফাইল তুলে ধরা”, তার পেশ করা বক্তব্যে বিষয়গুলি ফুটে ওঠে।
RBI এর নির্দেশে বাতিল হয়ে গেল, আরেকটি ব্যাংক, লাইসেন্স বাতিল, টাকা পয়সা সব গেল।
এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে চিদাম্বরমজি উল্লেখ করেছেন যে, “15 লক্ষ এবং 44 হাজার কোটি টাকার নোট বাতিল করা হয়েছিল। প্রতিদিন, 11 কোটি মানুষ এক সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন। জেলা সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে নোট বিনিময়ের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কৃষকদের সার বা বীজ কেনার জন্য তহবিলের অভাব ছিল। মজুরি ছিল না। অর্থ প্রদান করা হয়েছে। অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। এটিএম মেশিনগুলিতে 2,000 টাকার নোটগুলি বিতরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ছিল না। এই সকল সমস্যাগুলির মূল কারণ যে তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেওয়া, তার প্রমাণ দেয়”।
সরকার যদি হলফনামা না দেয় বা সরকারের দেওয়া হলফনামা যদি সুপ্রিমকোর্টের মহামান্য বিচারপতিদের ডিভিশন বেঞ্চের সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে অসফল হয় তাহলে কি বাজারে আবার ফিরতে পারে পুরানো 500 টাকার বা 1000 টাকার পুরানো নোট? এমন আরও খবরের সন্ধান পেতে ফলো করুন আমাদের ওয়েব পেজটি। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.