Ration Card – প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী গ্রেপ্তার হতেই পশ্চিমবঙ্গে বাতিল হলো 2 কোটি রেশন কার্ড। আরও কাদের কার্ড বাতিল হবে, জেনে নিন।
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২ কোটি রেশন কার্ড বাতিল (Fake Ration Card Cancelled) করল নবান্ন। কারণ কি? গরিব মানুষের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে কি এতে?
বিভিন্ন দুর্নীতি মূলক ঘটনার অভিযোগ এর আগেও অনেকবারই সামনে এসেছে। কয়লা, বালি, গোরু ইত্যাদি পাচারকান্ডের দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে অনেক তাবড় তাবড় নেতা মন্ত্রীর। এমনকি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাগুলিকে কেন্দ্র করেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সরকারের প্রতি।
Fake Ration Card Cancelled in West Bengal
এসব দুর্নীতির ঘটনা শুনে হতভম্ব হয়েছেন রাজ্যের মানুষ। এই সমস্ত কান্ড গুলি নিয়ে মামলা এখনো পর্যন্ত চলছে আদালতে। যার জেরে পাওয়া যাচ্ছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। তবে এবার সরকারের এরকমই আরেকটি দুর্নীতির পর্দা ফাঁস হলো জনগণের সামনে। গরিবের রেশন নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে। এমনকি এও জানা গেছে, নবান্ন মারফত ২ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড নাকি বাতিল করা হয়েছে এই দুর্নীতির কান্ডে।
এর কুপ্রভাব পড়েছে অনেক অসহায় দরিদ্র মানুষের ওপরেও। সম্প্রতি তদন্তকারী সংস্থা ED এই দুর্নীতির সমাধান করতে পদক্ষেপ নিয়েছে। দেখা যাক তদন্ত মারফত কি কি তথ্য মিলল।
রেশন নিয়ে দুর্নীতি কোন নতুন ঘটনা নয়। এর আগে রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে একাধিকবার কালোবাজারির অভিযোগ পাওয়া গেছে রেশন সামগ্রী (Ration Items) নিয়ে।
তবে এই কাণ্ডে যে সরকারের তৎকালীন মন্ত্রীর নাম পর্যন্ত জড়াতে পারে তা আশা করতে পারেনি রাজ্যের মানুষ। কিন্তু এবারে ঠিক তেমনটাই হল। তদন্তকারী সংস্থার মারফত খবর মিলেছে রেশনের জন্য সরকারের তরফ থেকে বরাদ্দ টাকা নিয়ে নয় ছয় করা হয়েছে কিছু অসাধু মানুষদের দ্বারা। কমপক্ষে ৪০০ কোটি বা তার বেশি টাকার অংকের হিসাব পেয়েছে ইডি। কিন্তু এই দুর্নীতির কাণ্ডে কেন নাম উঠে এলো বড় বড় নেতাদের?
আর এরই মধ্যে কাক্তালিয় ভাবে কেনই বা তারা বাতিল করলো ২ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড (Fake Ration Card)? তবে সবটাই কি দুর্নীতি টাকা দেওয়ার চেষ্টা? এই রহস্যের সমাধান করতেই এখন মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা সংস্থা ইডি।
রেশন দুর্নীতির (Ration Card Scam) এই ঘটনা নতুন নয়। ২০২১ সাল থেকে শুরু হয়েছে এটি। তখন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) যিনি বর্তমান বনমন্ত্রী। রেশন দুর্নীতির এই কাণ্ডে প্রধানত নাম জড়িয়েছে তারই।
অভিযোগ আছে, খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি সরকারের তরফ থেকে গরিব মানুষের রেশনের জন্য বরাদ্দ করা টাকা নিয়ে নাকি কালোবাজারি করেছেন। ইতিমধ্যেই গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা সেই মন্ত্রীর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন এবং এটিকেই তারা প্রমাণ হিসেবে খাড়া করতে চাইছেন। অভিযোগ উঠে এসেছে, অভিযুক্ত মন্ত্রী (Jyotipriya Mallick) নাকি নিজের স্ত্রী, কন্যা, পরিবারের সদস্য, প্রাক্তন আপ্তসহায়কের পরিবার, এমনকি তার বাড়ির পরিচারকদের দিয়েও চালাতেন এই দুর্নীতির কাজ। যদিও এই সমস্ত কিছুই তদন্ত ও প্রমান সাপেক্ষ।
আরও পড়ুন, নভেম্বর মাসে কোন রেশন কার্ডে কি কি রেশন মিলবে? দেখে নিন সম্পুর্ন তালিকা।
ইডি সূত্রে খবর একাধিক শেল কোম্পানির সাহায্য নেওয়া হয়েছে এই কাজটি করতে। এ ব্যাপারে মোট ১৫ টি এরকম কোম্পানির নাম জড়িয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ৩ টির সন্ধান এখনো পর্যন্ত করতে পেরেছে গোয়েন্দা সংস্থা। বাকি রয়েছে এখনো অনেক। এগুলি কে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে জোর কদমে, জানিয়েছে ইডি। গোয়েন্দা সংস্থা মারফত আরো খবর মিলেছে, রেশন নিয়ে কালোবাজারির এই টাকাকে বৈধ বলেও চালানো হয় তখন। এ ব্যাপারে ১০ টি সংস্থার সন্ধান পেয়েছে তারা। এগুলিকে ধরারও চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, কালীপুজোর আগেই একাউন্টে ঢুকবে কড়কড়ে 10 হাজার টাকা। সরকারের বিরাট ঘোষণা।
কাদের কার্ড বাতিল হয়েছে?
সংবাদ সুত্রে জানা গেছে, যে সমস্ত রেশন কার্ড বাতিল (Ration Card Cancelled) হয়েছে, তাদের অধিকাংশই নাকি হয় মারা গেছেন, নতুবা একই নামে ডবল রেশন কার্ড (Duplecate Ration Card) রয়েছে। আধার লিংক করার পরই এই ভুয়ো রেশন কার্ড সনাক্ত করা গেছে। রাজ্যে এখনও ১০০% রেশন কার্ড কে আধার এর সঙ্গে লিংক করা সম্ভব হয়নি। আর এই সুযোগেই নাকি এই ভুয়ো রেশন কার্ডের (Ration card) বার বাড়ন্ত। তবে এই দুর্নীতি কি শুধুমাত্র শুধুমাত্র স্থানীয় ডিলার রাই যুক্ত নাকি হেভিওয়েট যোগ রয়েছে, সেটার প্রশ্নের উত্তর খুজছে তদন্তকারী সংস্থা। আপডেট আসছে।
Written by Nabadip Saha.